নড়বড়ে মসনদ, পুতিন কোথায় কেউ জানে না

ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের অগ্রসরের খবরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমানে করে মস্কো থেকে পালিয়েছেন বলে দ্য নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ফ্লাইট রাডারের তথ্যমতে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের একটি বিমান মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে উড়ে যাওয়ার পর তা রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর থেকেই পুতিনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দাবি করা হচ্ছে- ভাগনার গ্রুপের অগ্রসরের খবরে পুতিন মস্কো থেকে পালিয়েছেন।
তবে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পুতিনের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, 'প্রেসিডেন্ট ক্রেমলিনে কাজ করছেন।' এদিকে চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ বলেছেন, তার বাহিনী ভাগনার গ্রুপকে দমন করতে রাশিয়ায় সাহায্য করছে আসছে। ভাগনার গ্রুপ রাশিয়ার দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তাতে পুতিনের সমগ্র কর্মজীবনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি।
আরও পড়ুন: গাজায় অনাহার-অপুষ্টিতে শিশুসহ আরও ১১ জনের মৃত্যু
এর আগে হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, রাশিয়ার দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সেনা সদর দপ্তর রোস্তভ এবং ভরোনেজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছেন ভাগনার গ্রুপ। এমনকি এখন তারা রাশিয়ার লিপেটস্কে ঢুকে পড়েছে। যা মস্কো থেকে ৬ ঘণ্টা দূরে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন মস্কোর সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দিয়েছেন। রুশ সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দেওয়া এই নেতা আরও বলেছেন, তিনি ও তার ২৫ হাজার যোদ্ধা ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত’ আছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প-পুতিন
তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং এর শেষ দেখে ছাড়ব। আমাদের এ চলার পথে যা কিছু বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তার সবকিছুকে ধ্বংস করে দেব।’ এদিকে ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দেওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন। শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন সব বাহিনীকে সংহতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যা কিছু ঘটছে, তা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’। এটি ‘দেশের জনগণের পিঠে ছুরি চালানোর শামিল’। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, সংকট মোকাবিলায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সুরক্ষা দেওয়ারও অঙ্গীকার করেন তিনি।
রাশিয়া পরিস্থিতির শান্তপূর্ণ সমাধানে সহায়তা করতে প্রস্তুত তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান। তিনি নিজে এ কথা জানিয়ে বলেছেন, রাশিয়ায় সশস্ত্র বিদ্রোহের শান্তিপূর্ণ সমাধান যত দ্রুত সময়ে সম্ভব খুঁজতে প্রস্তুত তুরস্ক। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোনকলে এ কথা বলেছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
রাশিয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জি৭ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে এই ফোনকলে যোগ দেন কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কোনো পরিবর্তন হবে না বলে আবারও জানিয়ে দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।