পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী

Babul khandakar
বাংলাবাজার পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ন, ২৬ জুলাই ২০২৩ | আপডেট: ১২:৫১ অপরাহ্ন, ২৬ জুলাই ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। বুধবার (২৬ জুলাই) দেওয়া এক বক্তৃতায় এই ঘোষণা দেন তিনি। আর এর মাধ্যমে তার ছেলে হুন মানেতের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন মানেত। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। কম্বোডিয়ার হুন সেন বুধবার এক বক্তৃতায় বলেছেন- তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন এবং তার ছেলে হুন মানেত আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দায়িত্ব নেবেন।

আরও পড়ুন: সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ানে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি, নিহত ১৪

তিনি বলেন, হুন মানেত...আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হবেন। আগামী ১০ আগস্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, প্রায় ৪০ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া শাসন করছেন হুন সেন। চলতি সপ্তাহে কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে তার দল ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পর হুন সেন এই ঘোষণা দিলেন।

আরও পড়ুন: গাজায় একতরফা গণহত্যা চলছে: জাতিসংঘে এরদোয়ান

তিনি বলেন, আমি ক্ষমতাসীন দলের প্রধান এবং জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যাব। হুন সেন বলেন, নবনির্বাচিত পার্লামেন্ট আগামী ২১ আগস্ট এবং নতুন মন্ত্রিসভা আগামী ২২ আগস্ট শপথ নেবে।

উল্লেখ্য, গত রোববার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শক্তিশালী প্রতিপক্ষহীন একতরফা ওই নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)।

সমালোচকরা দেশটির এবারের সাধারণ নির্বাচনকে ‘ব্যাপক প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি দেশটির শক্তিশালী কোনও বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আর যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের হুন সেনের সিপিপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতাও নেই।

সমালোচকরা বলছেন, হুন সেন তার বড় ছেলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দলের ক্ষমতায় থাকার পথ পোক্ত করতেই বিরোধী শক্তিবিহীন এই নির্বাচন আয়োজন করেন।

আর এরপরই কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে দেশটিতে কিছু বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। মূলত গণতন্ত্রকে অবমূল্যায়ন ও ধ্বংসসাধনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

সিপিপির সঙ্গে এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল আরও ১৭টি রাজনৈতিক দল। যদিও এই ১৭টি দলের বেশিরভাগই নাম-সর্বস্ব। তাদের কোনও দলই এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি। আর তাই ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ এই নির্বাচনের পরপরই কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি কিছু সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, গত ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় আছেন ৭০ বছর বয়সী হুন সেন। নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে পাত্তাই দেননি তিনি। নির্বাচনে জয়ী হলে তার বড় ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন হুন সেন।

বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি সেই ঘোষণাই দিলেন। আর এর মধ্য দিয়ে সাবেক এই খেমার রুজ গেরিলার শাসনের অবসান ঘটতে চলেছে কম্বোডিয়ায়।