‘ন্যাটোতে আক্রমণ করতে পারে রাশিয়া’

রাশিয়া আগামী চার বছরের মধ্যে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জার্মানির প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল কার্সটেন ব্রয়েয়ার। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। রোববার (৪ জুন) রাতে বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জেনারেল ব্রয়েয়ার বলেন, রাশিয়া প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন করছে। তার দাবি, মস্কো বছরে প্রায় ১,৫০০ যুদ্ধ ট্যাংক তৈরি করছে, যার বড় একটি অংশ ইউক্রেন ছাড়াও পশ্চিমমুখী মজুতে সংরক্ষিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালে রাশিয়া প্রায় ৪০ লাখ ১৫২ মিমি কামানের গোলাবারুদ তৈরি করেছে, যেগুলোর সবই ইউক্রেনে ব্যবহৃত হয়নি। এই বিশাল সামরিক প্রস্তুতির পেছনে শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, বরং সম্ভাব্য পশ্চিমা সংঘাতের ছায়া রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: গাজায় অনাহার-অপুষ্টিতে শিশুসহ আরও ১১ জনের মৃত্যু
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ২০২৯ সালের মধ্যে রাশিয়া ন্যাটোর বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারে। তবে ব্রয়েয়ার সতর্ক করে বলেন, “এটা বলা যাবে না যে হামলা ২০২৯ সালের আগে হবে না। তাই আমাদের আজই প্রস্তুত থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ‘সুয়ালকির গ্যাপ’—লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, রাশিয়া ও বেলারুশ সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলটি ন্যাটোর জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার একেবারে কাছাকাছি। সেখানে গেলে বোঝা যায়, কী ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগ তারা প্রতিনিয়ত অনুভব করছে।”
আরও পড়ুন: ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প-পুতিন
তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে বৃহত্তর ন্যাটো-রাশিয়া সংঘাতের একটি অংশ হিসেবে দেখছে। তারা ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় দুর্বলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এবং বারবার তা যাচাই করছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যাওয়া কেবল সংযোগে হামলা, ইউরোপের গণপরিবহনে সাইবার আক্রমণ, এবং জার্মান পাওয়ার প্লান্টের ওপর অজ্ঞাত ড্রোন উড্ডয়ন—এসবই রাশিয়ার কৌশলের ইঙ্গিত দেয়।
ন্যাটো জোটে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার রাশিয়াপন্থি অবস্থানের পরও ঐক্য বজায় আছে বলে দাবি করেছেন জার্মান প্রতিরক্ষা প্রধান। তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের মাধ্যমে আমরা এক নতুন ঐক্যের সাক্ষী হয়েছি। আমি আমার ৪০ বছরের সেনা জীবনে এমন ঐক্য আগে দেখিনি।