‘শক্তিশালী’ বিমান হামলার নির্দেশ
ইসরায়েলের নতুন হামলায় গাজায় নিহত ১৮, যুদ্ধবিরতি নিয়ে শঙ্কা
গাজায় কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৮ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার দক্ষিণ রাফাহ এলাকায় আকস্মিক গুলিবিনিময়ে একজন ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে ‘শক্তিশালী’ বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এর পরপরই গাজা সিটি, খান ইউনিস এবং সাবরা এলাকায় একাধিক হামলা চালানো হয়, যেখানে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দীর্ঘ বৈঠকের পর সেনাবাহিনীকে এ নির্দেশনা দেন যুদ্ধপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ আঘাত হানলো অন্ধ্র প্রদেশে, নিহত ১, আহত ২
চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির সাবরা এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে চালানো হামলায় একই পরিবারের অন্তত চার সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া খান ইউনিসে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আল-শিফা হাসপাতালের পেছনে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে এবং রোগী ও চিকিৎসা কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে কাজ করছেন।
এদিকে, হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায় যে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া তারা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সংগঠনটি সতর্ক করে জানিয়েছে, চলমান হামলা অব্যাহত থাকলে এখনো নিখোঁজ থাকা ১৩ বন্দির মরদেহ উদ্ধারের প্রচেষ্টা দীর্ঘায়িত হবে।
আরও পড়ুন: হারিকেন মেলিসার ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাণ্ডব, নিহত ৭
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ক্ষুদ্র সংঘর্ষ হলেও যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। তিনি বলেন, কখনও কখনও স্থানীয় পর্যায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত যে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা সম্ভব হবে। তবে একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়টি স্বীকারও করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির পর থেকেই ইসরায়েল ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, সাহায্যের প্রবেশ এবং বিমান হামলা চালিয়ে যুদ্ধকে নিজের শর্তে চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে নেতানিয়াহুর প্রশাসন। তাদের মতে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিকে স্থিতিশীল না রেখে ধীরে ধীরে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার মতো পরিবেশ তৈরি করছে।
গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখনো পর্যন্ত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা থাকায় খাদ্য, পানি, চিকিৎসা সামগ্রী ও জ্বালানির সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।





