আসাম মুখ্যমন্ত্রীর কড়া প্রতিক্রিয়া
হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য ঘিরে ভারত-বাংলাদেশে কূটনৈতিক উত্তেজনা
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে সম্মান না করে, তাহলে বাংলাদেশ ভারতবিরোধী শক্তি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিতে পারে।
আরও পড়ুন: গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে একই পরিবারের ৩০ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার
তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পৃষ্ঠপোষকেরা অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মানুষকে উসকে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ক্ষমতা ও মন্ত্রিত্বের লোভে একটি গোষ্ঠী দিল্লিকে ‘কেবলা’ বানিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বাংলাদেশকে ‘শকুনদের হাত থেকে মুক্ত’ করার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তবে সেই ‘প্রতিরোধের আগুন’ সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ সময় তিনি ভারত বাংলাদেশকে আরেকটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
হাসনাত আবদুল্লাহর এসব মন্তব্যকে ভারতীয় কর্মকর্তারা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে একীভূত করা বা বিচ্ছিন্ন করার ধারণা সম্পূর্ণভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক।
তিনি বলেন, গত এক বছরে বারবার এমন বক্তব্য উঠে আসছে যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ভারতের অবস্থান তুলে ধরে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, ভারত একটি বড় দেশ, একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। বাংলাদেশ কীভাবে এ ধরনের চিন্তা করতে পারে—তা বোধগম্য নয়।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ ধরনের শত্রুতামূলক বক্তব্য ও আচরণ চলতে থাকলে ভারত নীরব থাকবে না। প্রয়োজনে কঠোর অবস্থান নিতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা—এই সাতটি রাজ্য রয়েছে। এর মধ্যে চারটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থলসীমান্ত রয়েছে।
