'বান্দরবানে সন্ত্রাসী হামলার পর রাষ্ট্র আর চুপ থাকতে পারে না'

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ন, ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, ০৭ এপ্রিল ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

শনিবার বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ে বলেছেন, রাষ্ট্র বান্দরবানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আর চুপ থাকবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দমাতে সরকারের যা প্রয়োজন সবকিছুই করবে। এখানে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, আর্মড পুলিশ এবং সীমান্ত এলাকাগুলোতে বিজিবির সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রীও সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন, তারা সম্মিলিতভাবে যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে। তার আগে র‌্যাব, আনসার, আর্মড পুলিশ আইনশৃঙ্খলা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। মূলত দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনো সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী এবং চাঁদাবাজকে এই ধরনের অন্যায় ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে দেব না।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ আমলে ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাট ও অর্থপাচার: অর্থ উপদেষ্টা

আসাদুজ্জামান খান বলেন, পাহাড়ে শান্তির জন্য শান্তি রক্ষা কমিটির মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ধৈর্য ধরে শান্তি আলোচনা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু আলোচনা চালানো অবস্থায় কেএনএফ আলোচনা না করে নিজেদের স্বার্থের জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। অথচ আমরা জেনেছি তাদের (কেএনএফ’র) সংখ্যা মূল জনসংখ্যার ১%ও নয়। কাজেই তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অস্ত্রের মহড়া দেওয়া এটি আশ্চর্যজনক। এটি কখনো মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেব। এই এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে যা যা করণীয় সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটনের অপার সম্ভাবনার একটা দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল। সেখানে কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বা অন্যের প্ররোচনায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে থাকে, আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখব। আমরা কাউকেই কোনো প্রকার ছাড় দিব না।

আরও পড়ুন: সরকারকে এক মাস সময় দিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

বিদেশিদের ইন্ধন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নিজেদের মধ্যে সংঘাত চলছে। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবেশি বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সাথেতো সুসম্পর্ক রয়েছেই। তারা আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। যারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে, তারা যদি বিদেশের মাটিতেও আশ্রয় নেয়, আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে নিয়ে এসে বিচারের ব্যবস্থা করবো।

কেএনএফ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, শান্তির যে আলোচনা শুরু হয়েছিল দুপক্ষের একটি এজেন্ডা আমাদের কাছে রয়েছে। দুবার আলোচনা করে তৃতীয় বৈঠকের নির্ধারিত সময়ের আগেই তারা শর্তভঙ্গ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, মূলত শান্তি আলোচনাটা ছিল তাদের কর্মকাণ্ড আড়াল করে, সামনে তাদের শক্তি প্রদর্শনটাই ছিল প্রধান কাজ।

এদিকে তার আগে সকালে ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান হেলিকপ্টারে রুমায় পৌছান। সেখানে তিনি রুমায় লুট হওয়া সোনালী ব্যাংক শাখা ও উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি হেলিকপ্টারে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্টে পৌছান। সেখান থেকে সাড়ে ১২টায় বান্দরবান সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে বান্দরবান পার্বত্য জেলা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মাহবুব আলম, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান মনিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।