জুমার পর গণ-অনশন

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মোড়ে থাকব: রইছ উদ্দীন

Sadek Ali
আরাফাত চৌধুুরী, জবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ন, ১৬ মে ২০২৫ | আপডেট: ৮:১৬ পূর্বাহ্ন, ১৬ মে ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

হামলাকারী পুলিশদের বিচার ও তিন দফা দাবি আদায়ে টানা তৃতীয় দিনের মত চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি। জুমার নামাজের আগে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট কোন ঘোষণা না আসলে বাদ জুমা গণ-অনশনের কর্মসূচীর ডাক দেন আন্দোলনকারীরা।

শুক্রবার (১৬ মে) যমুনা সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়ক অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। উল্লেযোগ্য সংখ্যক আন্দোলনকারী রাতভর যমুনার সামনে সড়কে অবস্থান করেন।

আরও পড়ুন: নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিদায় নেবো: ধর্ম উপদেষ্টা

টানা তৃতীয় দিনের মত চলা অবস্থান কর্মসূচিতে শুক্রবার বেলা বাড়ার সাথে শিক্ষার্থীদের সমাগম বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ স্থলে ধাপে ধাপে আসতে থাকেন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের এলামনাই সংগঠনগুলোর উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। 

এর আগে বুধবার দিবাগত রাত ১২ টায় একটি সংবাদ সম্মেলনে, অবস্থান কর্মসূচির দুই দিন পূর্ণ হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ঘোষণা না আসায় আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দীন শুক্রবারে সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে গণসমাবেশ এর ঘোষণা দেন এবং জুমার নামাজের আগে দাবির ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসলে জুমার পর থেকে গণ-অনশনের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সদস্য সচিব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ১৪ মে-কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের “কালো দিবস” হিসেবে ঘোষণা দেন। 

আরও পড়ুন: বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ করা হয়নি উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদের হিসাব

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, যাদের কাছে আমাদের দাবি নিয়ে এসেছি, তাদের কর্ণকুহরে আমাদের কথা পৌঁছাচ্ছে না। আমাদের দাবি আদায় হবে, নয়ত আমরা এখানেই থাকব, এখানেই আমাদের মৃত্যু হবে। আমাদের দাবি আদায় হলে আমাদের কর্মসূচি তৎক্ষণাৎ সমাপ্ত ঘোষণা করবো।

তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘জবি ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ গত মঙ্গলবার ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার দুপুরে কাকরাইল মসজিদের সামনে এলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের বাধা দিয়ে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠি চার্জ করে, ফলে অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা তিনদফা দাবির সাথে হামলাকারী পুলিশদের বিচার চেয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে রাত-দিন টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এতে আশেপাশের সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হতে দেখা যায়।

 শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হল- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।