রাজনীতির নতুন ডাইমেনশন নিয়ে কৌতুহল

লন্ডনে ইউনুস-তারেক বৈঠকের নেপথ্যে কী আছে

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২০ পূর্বাহ্ন, ১১ জুন ২০২৫ | আপডেট: ৩:০৬ পূর্বাহ্ন, ১১ জুন ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাজ্য সফররত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামী ১৩ জুন শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকালে  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১০জুন) এই বৈঠকটি বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এমন এক সময়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিএনপি ও সরকারের টানাপড়েন চলছে।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্য সফরে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠকের বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে যোগাযোগও করা হয়।

সূত্রগুলো জানায়, প্রথম দিকে বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের ব্যাপারে অতটা আগ্রহ ছিল না। তবে নির্বাচন সময়ের প্রশ্নে আলোচনা হতে পারে, সেই প্রশ্ন থেকে শেষ পর্যন্ত দলটি এই বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বৈঠকের উদ্যোগটা আমাদের পক্ষ থেকে ছিল না। যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা ব্রিটেন যাচ্ছেন, তিনি মনে করেছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করবেন। এটা একটা সৌজন্যতা। দেখা করবেন না বললে তো মানুষ ঠিকভাবে নেবে না।’

অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক ইস্যুতে সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়।

মঙ্গলবার সকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের এই বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বড় ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে, অনেক সুযোগ তৈরি হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য এই বৈঠকটিকে দেখছে দুইটি পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট কাটানোর উদ্যোগ হিসেবেই।

প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের ঘোষণা আসার পর থেকেই তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা আলোচনা চলছিল। আলোচনা চললেও সোমবার পর্যন্ত এ নিয়ে সরকার কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে খোলাসা করে কিছু বলা হয়নি। তবে ভেতরে ভেতরে যে একটা আলোচনা চলছিল সেটা আকার ইঙ্গিতে সরকার ও বিএনপির পক্ষ থেকে গত দুই দিনে ইঙ্গিতও মিলেছিল।

এসব বিষয় নিয়ে সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়টি।

বিএনপি জানিয়েছে, আগামী ১৩ জুন শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টা থেকে ১১টা পর্যন্ত লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বৈঠকের বিষয়ে মূল আগ্রহ দেখানো হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকেই। যে কারণে সায় দিয়েছে বিএনপি।

মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি খোলাসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা (বৈঠক) বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই, যখন প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে যাবেন সিদ্ধান্ত হয়েছে, তখন থেকেই মোটামুটি একটু আলোচনা হচ্ছিল যে, সেখানে যেহেতু আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় আছেন একটা সাক্ষাৎ হতে পারে… এই সম্ভাবনা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল। উনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্যে। এই মিটিংয়ের জন্য আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট কাটাতে পজিটিভ ভূমিকা রাখতে পারে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি নেতার এই বৈঠকে আগামী দিনের রাজনীতিতে নতুন মাত্রাও যোগ করতে পারে।