চীনের তৈরি এফ-৭ তৃতীয় প্রজন্মের যুদ্ধবিমান

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২০ পূর্বাহ্ন, ২২ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৫:২০ পূর্বাহ্ন, ২২ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাদে বিধ্বস্ত হওয়া যুদ্ধবিমানটি ছিল চীনের তৈরি এফ-৭ বিজিআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান। এটি মূলত ইন্টারসেপ্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সীমিত সামরিক প্রয়োজনে ও প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

এই যুদ্ধবিমানটি চীনের চেংদু জে-৭ এর রপ্তানি সংস্করণ, যা আবার সোভিয়েত ইউনিয়নের মিগ-২১ এর লাইসেন্সড কপি। চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার বিমানবাহিনী এই মডেলের বিমান ব্যবহার করেছে বা করছে।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি ২০১৩ সালের পর আর উৎপাদিত হয়নি। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত এর ৩৬টি কিনেছে। যদিও এটি এখন পুরনো প্রযুক্তির, তথাপি সীমিত যুদ্ধ এবং প্রশিক্ষণ মিশনে ব্যবহারযোগ্য বলে ধরা হয়। তবে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ায় এটি নিয়ে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চীন সরকার দুই বছর আগে এ মডেল ডিকমিশন করার সিদ্ধান্ত নেয়, এর আগেই মিসর ও আলবেনিয়াও এই সিরিজ বাদ দিয়েছে। বাংলাদেশে এই বিমান হস্তান্তরের পর চীন আর এ মডেল তৈরি করেনি। চীন ইতিমধ্যে জে-১০ সিরিজের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান বাংলাদেশকে অফার করলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ বাংলাদেশ নেয়নি।

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

চাইনিজ এফ-৭ সিরিজের এই বিমানে বাংলাদেশে এর আগেও অন্তত দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, এই মডেলের যুদ্ধবিমানে চীনসহ অন্যান্য দেশেও দুর্ঘটনার ঘটনা রয়েছে। চীনে একবার একটি এফ-৭ বিল্ডিংয়ে ধাক্কা দিয়ে একজন নিহত হওয়ার পর পরই দেশটি এই বিমান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

এই এফ-৭ বিমান সর্বশেষ ২০১৩ সালে উৎপাদিত হয়েছে। এ পর্যন্ত এই ভার্সনের ৩৬টি বিমান কিনেছে বাংলাদেশ। চীন ২০১৭ থেকে দুই বছর আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বাংলাদেশকে অফিশিয়ালি তাদের জে-১০ যুদ্ধবিমানের লেটেস্ট ভার্সন অফার করছে পুরাতন এফ-৭ যুদ্ধবিমানের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে। বছর দুয়েক আগেই চীন সরকার এই মডেলকে ডিকমিশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মিসর, আলবেনিয়া এই মডেল ব্যবহার ইতিমধ্যে বাদ দিয়েছে। কিন্তু তখন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশে চাইনিজ এই ট্রেনিং বিমানে আগেও পৃথক দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া যে সকল দেশ এ বিমানটি ব্যবহার করছে প্রায় সবাই কমবেশি দুর্ঘটনার শিকার। চীনে এই বিমান বিল্ডিংয়ে ধাক্কা দিয়ে একজন মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই বিমানগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশটি। মূলত কম বাজেটে উন্নত ফ্যাসালিটিজের প্রেক্ষাপটে এ মডেলের যুদ্ধবিমান আমদানি করেছিল বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের কাছে এই বিমান হস্তান্তরের পর এই মডেল আর বানায়নি চীন। 

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের প্রয়োজন মেটাতেই এফ-৭-এর ডিজাইন ও উন্নয়ন শুরু হয়। এফ-৭ একটি অল-ওয়েদার ইন্টারসেপ্টর, অর্থাৎ যে কোনো আবহাওয়ায় যুদ্ধ করতে সক্ষম। ডেল্টা আকৃতির পাখা এটিকে দ্রুত উঁচুতে ও শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে উড়তে সাহায্য করে। তবে যুদ্ধবিমানটির সীমিত রেঞ্জের কারণে এটি মূলত পয়েন্ট-ডিফেন্স (সীমিত অঞ্চলে প্রতিরক্ষা) মিশনের জন্য বেশি কার্যকর।