১২শ জনের নামে মামলা

সচিবালয় ঘেরাও ও মাইলস্টোনে বিক্ষোভে গুজব ছড়ানো উস্কানিদাতারা চিহ্নিত

Any Akter
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ন, ২৪ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, ২৪ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মাইলস্টোন স্কুলের বিমান বিদ্যের শোকাহত ঘটনার সুযোগে গুজব ছড়িয়ে নাশকতার চেষ্টাকারীদের করা হয়েছে। ১২ শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে সচিবালয় হামলা ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে নতুন অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।  মাইলস্টোন দুর্ঘটনার ট্রাজেডিতে শোকের কালো ছায়ায় ঘাপটি মেরে থাকা পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি ভয়ংকর নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন। বিমান  দুর্ঘটনার হতাহতের তালিকা, লাশ গুম,  এসএসসি পরীক্ষা ও সর্বোপরি সদস্য বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা গুজব ছড়িয়ে কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের উস্কা দেয়। শোকে নিস্তব্ধতার সুযোগে অভিভাবক সাজিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে মাইলস্টোন চত্বরে।  একই সময়ে ঢাকা শহরের সাত কলেজ স্কুলের শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষা ও মাইলস্টোনের রাশ গুমের নিত্য নতুন গুজব ছড়িয়ে।  সরকারের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয় সামনে বিক্ষোভ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই হঠাৎ করে প্রধান ফটো ভেংগে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে।  তাদের কি দাবি তাও স্পষ্ট ছিল না। শুধু বলছিল শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের পদত্যাগ।৷ তাতক্ষরিক শিক্ষা সচিব কে অপসারণ করা হলেও তারা চারদিক থেকে হামলা করছিল সচিবালয়। পুলিশের পাশাপাশি এরপরই সেনাবাহিনী তাদের প্রতিরোধ করে সচিবালয়ের স্থাপনার রক্ষা করে।

একই সাথে মাইলস্টোনে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পক্ষের নামে  দীর্ঘ নয় ঘন্টা আটকে রাখে আইন উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবকে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের৬ দফা দাবি মেনে নিলেওতারা হামলা করে সচিবালয় ভাঙচুর করে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তাৎক্ষণাৎ শক্তি প্রয়োগ করে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। উত্তরার মাইলস্টোন ও সচিবালয় বিক্ষুব দমনে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপরেই প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস পরিকল্পিতই নাশকতায় গোপন তথ্যের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের সাথে আলোচনায় বসে। বিএনপি জামাত ইসলামী এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সাথে আলোচনায় পরাজিত আওয়ামী শক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা বন্ধন। বুধবারে ও তেরোটি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেন।  ১৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

এতে অংশ নিয়েছেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির তানিয়া রব, ১২–দলীয় জোটের শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের মিজানুর রহমান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আয়োজন ছিল সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে অতীতকে স্মরণ করা, সেজন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা দৃশ্যমান হতো। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’ 

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

‘মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার। তা না হলে তারা এটাকে সুযোগ মনে করছে,’ বলেন তিনি।  

 বৈঠকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও গণঐক্য অটুট রাখার বিষয়ে অংশগ্রহণকারী সকল দল সমর্থন জানান। তারা আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে ও ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করতে আরও নিয়মিত ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সর্বদলীয় সভা আয়োজনের অনুরোধ জানান।প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

এদিকে মাইলস্টোনের নিহতের তালিকা ও লাশ গুম নিয়ে একটি মহলের সামাজিক মাধ্যমে নানা অপপ্রচারের বিষয়ে আন্ত বাহিনীর সংযোগ পরিদপ্তর বক্তব্য প্রদান করেছেন। 

আই এস পি আর এর পরিচালক বলেন, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অনেকেই না বুঝে এসব গুজবে বিশ্বাস করছেন।

ঘটনার পরপরই, কোনও পূর্ব নির্দেশনা ছাড়াই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত সাড়া দিয়েছে; যেমনটি সবসময় করে থাকে। আমাদের সন্তানদের বিষয়ে কোনও তথ্য গোপন করার ইচ্ছা বা প্রয়াস আমাদের নেই। আমি নিজে এবং আইএসপিআর টিম সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম।

অতএব, আইএসপিআরের পরিচালক হিসেবে আমি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি: যেকোনো গণমাধ্যম চাইলেই এ বিষয়ে তদন্ত করতে পারে, সেনাবাহিনীসহ যে কাউকে ইন্টারভিউ  করতে পারে, বা সংশ্লিষ্ট যেকোনো স্থান পরিদর্শন করতে পারে। আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করতে প্রস্তুত আছি এবং আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা ককরা হবে। হঠাৎ করেই  স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের  সচিবালয় ঘেরাও হামলার বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায় বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে উস্কিয়ে সংঘটিত করা হয়।  

প্রথমত এইচ এস সি পরীক্ষা স্থগিত নিয়ে শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা উপদেষ্টার সিদ্ধান্তহীনতায় রাত তিনটার সময় পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণাকে বিভ্রান্ত তৈরি করে। অপর দিকে ফলাফল প্রকাশ হওয়া এসএসসি পরীক্ষার অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের পাশের দাবিতে সংগঠিত করা হয়।  কিছু দিন আগে  আন্দোলন করা সাত কলেজের বৃন্দকে সংগঠিত করা হয়।  ছাত্র আন্দোলন ও মাইলস্টোন এর ছাত্র অভিভাবক বিক্ষোভকে উস্কানিমূলক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।  মাইলস্টোন ট্রাজেডি র কত ঘটনায় শোকের স্তব্ধতার সুযোগ নিয়ে যারা কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উস্তানি দিয়ে নাশকতার মব চেষ্টা করেছিল তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে করা হচ্ছে। ।