৩০ জুলাই ২০২৪: প্রতিবাদে ‘লাল রঙে রঙিন’ সামাজিকমাধ্যম

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, ৩০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৩:২৫ অপরাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গত বছরের ৩০ জুলাই, ২০২৪ এই দিনে দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা লাল রঙে রঞ্জিত করে নিজেদের প্রোফাইল। নিহতদের স্মরণে গত বছরের ৩০ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু শোকের সেই কালো রঙের বিপরীতে মুখ-চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছবি দিয়ে অনলাইনে প্রচার কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এতে সংহতি জানিয়ে বহু মানুষ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ নিজ প্রোফাইলে লাল রঙের ছবি আপলোড করেন। অনেকের মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারকারাও লাল রঙে বদলেছেন নিজের প্রোফাইল পিকচার। সেইসঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা এবং হত্যার বিচারের দাবিতে ক্ষোভ ও প্রতিবাদও জানিয়েছেন তারা।

৩০ জুলাই, ২০২৪ সালে সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা আসে রাষ্ট্রীয় শোকের। তবে শোকের সেই ঘোষণাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এদেশের আপামর জনতা। কোটি মানুষ এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রোফাইল রাঙিয়ে তোলে বিপ্লবের লাল রঙে। হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিলে নামে ছাত্র-জনতা। শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন বিক্ষোভে। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবকদের পাশাপাশি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশিষ্ট নাগরিকরাও। এদিন জনসমক্ষে হতাহতের জন্য সরকারের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করেন তারা।

আরও পড়ুন: আটকে আছে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার

এছাড়াও কারফিউ তুলে নেওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের পদত্যাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, আটককৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত কমিশন করে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারসহ ১১ দফা দাবি জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের ফোরাম-সাদা দল।

এদিন, বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণের খবরে উদ্বেগ জানান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিলেন ইইউর তখনকার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।

আরও পড়ুন: কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন সিইসি

এদিকে, ৬ সমন্বয়ককে কোন আইনে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এতো সহিংসতায় আদালত লজ্জিত বলেও জানায়।

তবে এতকিছুর মাঝে সরকার তখন ব্যস্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কাজে। সরকারের তিন মন্ত্রীই জানান পরদিনের মধ্যেই নিষিদ্ধ হবে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে এই অপশক্তি যেন আর কোনো সুযোগ না পায়।

 সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এই দলটিকে নিষিদ্ধ করা হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও রাজনীতিতে দৃশ্যমান উন্নতি হবে।’ অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জঙ্গি উত্থান ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জামায়াত ইসলামী সক্রিয়ভাবে জড়িত। তাই ১৪-দলীয় জোটসহ রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে দলটিকে নিষিদ্ধ করার এবং সেই প্রক্রিয়া এখন চলমান।

সংবাদ সম্মেলনে গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন সেসময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জানিয়েছিলেন পরদিন থেকে কারফিউ শিথিল করা হবে।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে ছিলো আন্দোলনকারীদের দমনের প্রচ্ছন্ন হুমকি। অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাটতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।