বিএনপি নেতা কর্নেল আজাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নানা অপপ্রচারের অভিযোগ

Sanchoy Biswas
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ন, ০৮ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:৪৫ অপরাহ্ন, ০৮ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল–১ আসনে (মধুপুর-ধনবাড়ি) জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী লে. কর্নেল (অবঃ) মো. আসাদুল ইসলাম ওরফে লে: কর্নেল আজাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ। মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কর্নেল আজাদ নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করার পর থেকেই নানা অপপ্রচার শুরু করেন একই দলের প্রতিপক্ষরা। আজাদের ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কোনো কর্মসূচি পালন করলেই প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে কথিত ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজাদের নেতৃত্বে বিজয় মিছিল করার সময় প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দলীয় স্বার্থে আজাদের অনুসারীরা শান্ত থাকে। এরপরও সন্ত্রাসীরা আজাদের অফিসে হামলা চালায় এবং তার ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নিবার্চন: সিইসি

স্থানীয়রা জানান, কর্নেল আজাদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার আপন বড়ভাই আশরাফুল ইসলাম মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে ৬ নম্বর মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। তার বাবা মরহুম গোলাম মোস্তফা বিএনপির সদস্য এবং গ্রাম সরকার প্রধান ছিলেন। বিএনপি পরিবার হওয়ার কারণে চাকরিতে সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আজাদকে পদোন্নতি না দিয়ে ২০১৬ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

আজাদ চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর মিরপুর এলাকায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি সে সময় একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বেশ বড় অঙ্কের টাকা ঋণ নেন। ওই ঋণের টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায় ওই ব্যবসায়ী আজাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি বিনিয়োগ চুক্তি করেন। সেই অনুযায়ী ঋণের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে গ্রহণ করেন। আজাদের রিয়েল এস্টেট ব্যবসার একটি জমি বিক্রি হওয়ার পরে বিনিয়োগকারীর ব্যাংকে লভ্যাংশসহ ঋণের টাকা ফেরত দেন। বিনিয়োগকারীর অনুরোধ অনুযায়ী সে সময় চুক্তিতে গ্যারান্টর হিসেবে তৎকালীন একজন সেনা কর্মকর্তার নাম ছিল। ওই সেনা কর্মকর্তা ছিলেন আজাদের ব্যাচমেট। পরে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ব্যাচমেট সেনা কর্মকর্তা গ্যারান্টর থাকায় অপপ্রচারকারী একটি পক্ষ আজাদকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে নানা ধরনের অপতথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে।

আরও পড়ুন: ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন হজযাত্রীরা

বিশেষ করে ঋণগ্রহণের সময় ব্যবসায়ীর সঙ্গে হওয়া চুক্তির কিছু ছবি এবং ওই বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে যৌথভাবে জমি ক্রয় এবং বিক্রির দলিলের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। তারা বলার চেষ্টা করছেন, ওই বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে আজাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং তিনি ওই সেনা কর্মকর্তার ব্যবসায়িক অংশীদার। তারা আরও প্রচার করছে ওই সেনা কর্মকর্তার কাছ থেকে আজাদ অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন, যার বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই।

কর্নেল আজাদের ঘনিষ্ঠরা অভিযোগ করেন, বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তাসহ ৩ জন মিলে একটি জমি ক্রয় করেন। বিনিয়োগকারী হিসেবে যার যার ব্যাংক হিসাব থেকে জমির দাম অনুযায়ী নির্ধারিত অংশের টাকা পরিশোধ করেন এবং তাদের সবার নামে যৌথ দলিল হয়েছে। বিতর্কিত ওই সেনা কর্মকর্তা নিজের অর্থে কেনা জমি তার স্ত্রীর নামে দলিল করেছেন। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তন হলে সেই সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। ওই সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে আজাদের রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই।

কর্নেল আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (এমপি) হিসেবে আমার একটি অনুষ্ঠানে আসেন। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। অনুষ্ঠানটি ছিল কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। পরে ইলিয়াস মোল্লার লোকজন ওই প্রকল্পের ব্যানার খুলে নির্বাচনের সময় তাদের একটি নির্বাচনী ব্যানার লাগায়। এখন সেই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন মহল। আমাকে ঘিরে বলা হচ্ছে, আমার সঙ্গে সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার ঘনিষ্ঠতা ছিল। অথচ এসব তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। তাই আমি এসব অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।