তাসকিনের অনুসারীরাই রং বদলে সিন্ডিকেট বানিয়েছে

অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ঢাকা ওয়াসা

Any Akter
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ন, ১২ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৪:৫৭ অপরাহ্ন, ১২ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত
  •  সাবেক এমডি তাকসিমের বিরুদ্ধে তদন্তে দুদক, তার মেয়াদে অবাস্তব প্রকল্পে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার পরও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে
  •  ওয়াসার এক কর্মকর্তা একই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসায় রাজস্ব কর্মকর্তা ও নোয়াখালী পৌরসভার সচিব হিসাবে দীর্ঘ নয় বছর ধরে কাজ করেছেন এবং দুই জায়গাতেই বেতন উত্তোলন করেছেন

অনিয়ম আর দুর্নীতির এক স্বর্গরাজ্য ঢাকা ওয়াসা। বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে ওয়াসার এমডি (বর্তমানে সাবেক) তাকসিম এ খানের অনিয়ম-দুর্নীতি রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। শেখ পরিবারের আত্মীয় পরিচয়ে তিনি ওয়াসায় দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানিয়েছেন। তার মর্জি মাফিক ওয়াসাকে চালিয়েছেন। বিদেশে থেকেও তিনি অফিস করেছেন, ইচ্ছে মতো নিজের বেতন বাড়িয়ে নিয়েছেন। কেউ কিচ্ছু বলার ছিল না বা বললেও তার কিছুই হতোনা। ওয়াসার এমডি থাকার সময় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ অন্যান্য খাতে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয়েছে। তিনি নিজে এবং বিগত সরকারের দোসরদের সঙ্গে নিয়েলা গামহীন লুটপাট চালিয়েছেন। তার মেয়াদে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নগরবাসী এসব থেকে সুবিধা পাননি। উলটো পানি ও পয়ঃসেবার দাম বাড়িয়ে রাজধানীবাসীকে দুর্ভোগে ফেলেছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ঢাকা ওয়াসাকে রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে এই সংস্থাটি প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সাবেক এমডি তাকসিম এ খানের হদিস মিলছে না। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তিনি পলাতক। এ অবস্থায় ১৪ আগস্ট তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেছেন। সরকার থেকে ২০ আগস্ট তার বিদেশ যাত্রায় ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিলেও তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর কার্যকর তৎপরতা নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ঢাকা ওয়াসা কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা সরকারকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেন, পদ্মা (যশলদিয়া) পানি শোধনগার প্রকল্পের সঞ্চালন লাইন নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের নি¤œানের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৬০০ কোটি টাকা, পানি ও পয়ঃবিলের ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকা, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ৬২১ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিতাড়িত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় বলে তিনি আইনের তোয়াক্কা না করে যা খুশি তাই করেছেন। অন্যায়ভাবে অনেককে চাকরিচ্যুত করেছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও অনেককে  স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে দেননি। ৫ আগস্টের পর ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

এর কিছুদিন পর তিনি  স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা জানান, প্রকৌশলী তাকসিম ছিলেন বেপরোয়া। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসাকে রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তার সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকেও  অতিষ্ঠ হয়ে ২০২৩ সালের ১৭ মে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রকৌশলী তাকসিমের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে চিঠি লিখেছিলেন। মন্ত্রণালয় তার তদন্ত না করে উপরন্তু অভিযোগ দেওয়ার ৪ দিনের মাথায় তাকে সরিয়ে দেয়। দুর্নীতির টাকার জোরে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করেছেন। এসব অনিয়মের কোনো তদন্ত বা শাস্তি হয়নি, উপরন্তু তাকে রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঢাকা ওয়াসায় তাকসিমের সময়ে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে; তা খুবই পরিষ্কার। পদ্মা (যশলদিয়া), দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে সঠিক তদন্ত করলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এছাড়া আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সেগুলোও সরকার তদন্ত করতে পারে। দুদক একবার তদন্ত শুরু করে রহস্যজনক কারণে থেমে যায়। মন্ত্রণালয়কে তিনি নিজ হাতের পুতুলে পরিণত করেন। 

এখন নতুন করে দুদক তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, এর মাধ্যমে প্রকৌশলী তাকসিমের সময়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঠিক চিত্র বেরিয়ে আসবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের ১৫ বছরে রাজধানীবাসীকে ন্যূনতম সেবা না দিয়ে অর্থ আদায়েরও নানা উদাহরণ রয়েছে। নগরীতে পয়ঃসেবা না থাকলেও বছরে এ খাতে নগরবাসীর কাছ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার এমডির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৪ সালে ভ‚-উপরিস্থ উৎস থেকে ৭০ শতাংশ এবং ভু-গর্ভস্থ উৎস থেকে ৩০ শতাংশ পানি উৎপাদনের ঘোষণা ছিল। বাস্তবে তার ধারে কাছেও যেতে পারেনি। এখনো ঢাকা ওয়াসার মোটর পানির ৭৬ শতাংশ ভ‚-গর্ভস্থ উৎস থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। আর ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে নেওয়া হচ্ছে ২৪ শতাংশ। ঢাকা ওয়াসার আলোচিত সদ্য পদত্যাগ করা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের বিদেশ যাত্রায় ২০ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে কমিশনের অনুমোদনক্রমে অনুসন্ধান কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ সংক্রান্ত চিঠি আদালত ও পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠান। দুদক গত বছরের ২৩ মে ঢাকা ওয়াসার অবৈধ নিয়োগের  অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে মামলা অনুমোদনের জন্য সুপারিশ চেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে। দুদক সূত্র জানায়,  নুসন্ধানে পরিচালক (উন্নয়ন) ও পরিচালক (কারিগর) এই দুটি পদ ওয়াসার অর্গানোগ্রামে না থাকা সত্বেও প্রতিষ্ঠানটির এমডি প্রভাব খাটিয়ে দুজনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যায়। আর ৪ বছরের বেশি সময় ধরে তাদের বেতন বাবদ ১ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮০ টাকা দেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ হওয়ায় এই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে অভিযোগ আনা হয়েছে। অবৈধ নিয়োগ দিয়ে তারা দুর্নীতি আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায়  শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন উল্লেখ করে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সুপারিশ করে কমিশনে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেছিল, যদিও অদৃশ্য কারণে ওই মামলা হয়নি। এখন নতুন করে বিভিন্ন প্রকল্প ও রাজস্ব খাত এবং নিয়োগের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করছে দুদক। সাবেক এমডি তাকসিম এ খানের সহযোগী ওয়াসার দাশেরকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ডিএসটিপি) প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মমতাজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও মমতাজুর রহমান এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ওয়াসার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সহকারী মমতাজুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে তাকে এখনও পালাতে হয়নি ওয়াসার দরবেশ নামে খ্যাত এই নির্বাহী প্রকৌশলী। ডিএসটিপিতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এক উপদেষ্টার অভিভাবক পরিদর্শন করার পর থেকেই তিনি

আরও শক্তিশালী হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াসা সংশ্লিষ্টরা। দাশেরকান্দি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট প্রকল্পটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালে অনুমোদিত ওই প্রকল্পের প্রাথমিক বাজেট ছিল ৩,৩১৭ কোটি টাকা, যা ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়াসহ অযৌক্তিক কিছু ইস্যু দেখিয়ে পরবর্তীতে বাড়িয়ে প্রাক্কালিত ব্যয়  দাঁড়ায় প্রায় ৩,৭১২ কোটি টাকা। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল গুলশান, বনানী, তেজগাঁও, মগবাজার, বাড্ডা, ধানমন্ডি ও হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার পয়োবর্জ্য পরিশোধন করে বালু নদে নিষ্কাশন করা। তবে, প্রকল্পের সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়ায় বাসাবাড়ির পয়োবর্জ্য শোধনাগারে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, ফলে প্রকল্পটি তার ল¶্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

হাতিরঝিলের পানি শোধন করতে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হলেও প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য শোধন বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ওয়াসার অনিয়ম বলে শেষ করা যাবে না। একই ব্যক্তি একাধিক স্থানে চাকরি করে বেতন নেওয়ার নজিরও এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। ওয়াসার এক কর্মকর্তা একই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসায় রাজস্ব কর্মকর্তা ও নোয়াখালী পৌরসভার সচিব হিসাবে দীর্ঘ নয় বছর ধরে কাজ করেছেন এবং দুই জায়গাতেই বেতন উত্তোলন করেছেন। অনিয়মের এমন ভয়াবহ নজির অবিশ্বাস্য হলেও ওয়সাতে তাই ঘটেছে। ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা এএমএম ইকরাম একই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসায় কর্মকর্তা এবং নোয়াখালী পৌরসভার সচিব পদে চাকরি করেছেন একই ব্যক্তি। দুই জায়গা থেকে টানা ৯ বছর বেতনও তুলেছেন। অবশেষে ধরা পড়ার পর তিনি পৌরসভার চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছেন। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপ¶ শাস্তি হিসাবে তাকে নিম্নতর বেতন স্কেলে নামিয়ে দিয়েছেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী তার চাকরিই থাকার কথা নয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০০১ সালে উচ্চমান সহকারী (ইউডিএ) পদে ওয়াসায় যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুটি পদোন্নতি বাগিয়ে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা বনে যান ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা এএমএম ইকরাম। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তিনি চাকরিচ্যুতির শাস্তি থেকে রেহাই পেয়েও ক্ষান্ত হননি। এখন তিনি উপপ্রধান রাজস্বকর্মকর্তা (ডিসিআরও) পদে পদোন্নতির জন্য দেনদরবার শুরু করেছেন।

জানা যায়, ওয়াসায় কর্মরত থাকা অবস্থায় বিজ্ঞপ্তি দেখে ইকরাম নোয়াখালী পৌরসভায় সচিব পদে আবেদন করেন। অংশ নেন লিখিত পরী¶ায়। লিখিত পরীক্ষয় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০০৫ সালের ৭ জুন ইকরাম নোয়াখালী পৌরসভায় সচিব পদে যোগ দেন। এরপর তিনি একই সঙ্গে দুই জায়গায় চাকরি করতে থাকেন। মাঝেমধ্যে তিনি নোয়াখালী পৌরসভায় অফিস করতেন। যখন যেতে পারতেন না, সেদিন তার মনোনীত একজন বহিরাগত তার হয়ে সেখানে কাজ করতেন। পৌরসভা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এভাবে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই জায়গা থেকেই বেতন তুলতে থাকেন ইকরাম। নোয়াখালী পৌরসভায় তার শুরুতে মূল বেতন স্কেল ছিল ৬ হাজার ৮০০ টাকা। ওয়াসায় শুরুতে মূল বেতন স্কেল ছিল ৫ হাজার ৫০০ টাকা। অভিযোগ জমা পড়ার পর ইকরামের কাছে ওয়াসা কর্তৃপ¶ জানতে চাইলে প্রথমে অ স্বীকার করেন। কিন্তু প্রশাসন তার জবাবে সন্তুষ্ট হতে না পারায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত কমিটি করে। তখন এসব বিষয় তদন্তে উঠে আসে। এই প্রতারণার কারণে ওয়াসা কর্তৃপ¶ তখন তার বেতন স্কেল ৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। পাশাপাশি নোয়াখালী পৌরসভার চাকরিটি তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। পরে ইকরাম পৌরসভার চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঢাকা ওয়াসায় থেকে যান। পাশাপাশি বরখাস্তকালীন বিনা বেতনে ‘অসাধারণ ছুটি’ হিসাবে মঞ্জুর করে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সমর্থক পরিচয়ে বিতর্কিত এই কর্মকর্তা ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ওয়াসা তাকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার দায়িত্ব বাগিয়ে নেন। সেটা আবার ২০১৩ সাল থেকে কার্যকর করে ওয়াসা। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারিতে তাকে রাজস্ব কর্মকর্তা হিসাবে আবারও পদোন্নতি দেওয়া হয়। রাজস্ব  কর্মকর্তার পদ প্রথম শ্রেণির। তবে এখন নিজেকে বিএনপির সমর্থক পরিচয় দিয়ে আরও উচ্চতর উপপ্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য দেনদরাবার শুরু করেছেন। ঢাকা ওয়াসার এক কর্মকর্তা বলেন, ওয়াসায় একসঙ্গে ৩২ জন উচ্চমান সহকারী নিয়োগ পান। তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার অবস্থানে ইকরাম ছিল ২৬ নম্বরে। তার আগের ২৫ জনের কেউ প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পাননি। এ নিয়ে অন্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভও রয়েছে।