মেঘনা নদীতে পুলিশের সাথে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষে তিন পুলিশ সহ আহত ৫

মেঘনা নদীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে তিন পুলিশ সহ আহত ৫
আরও পড়ুন: বিচারকদেরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত: ট্রাইব্যুনালের অভিমত
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মেঘনা নদীতে বিভিন্ন নৌযানে চাদাঁবাজীর সময় পুলিশ-চাদাঁবাজদের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও টেটাবিদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালে সোনারগাঁওয়ের মেঘনা নদীর বারদীর নুনেরটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ দুই চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ও বারদী ইউনিয়নের বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে ও কুমিল্লার চালিভাঙা ইউনিয়নের নলচর এলাকা জুড়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীতে দীর্ঘদিন যাবত মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামের বারেকের নেতৃত্বে তার ছেলে মহসিন, হাসনাত, রানা, সাজ্জাদসহ ২০/৩০ জনের একটি চাঁদাবাজ চক্র বালু ও মালবাহী বিভিন্ন নৌযানে চাঁদাবাজী করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালেও বারেকের নেতৃত্বে টিটু ও মহসিনসহ তাদের লোকজন দেশীয় অস্ত্র টেটা, বল্লম, রামদা নিয়ে মেঘনা নদীর নলচর এলাকায় বিভিন্ন নৌযানে চাঁদাবাজী শুরু করে। এসময় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এসবি জয়নব বৃষ্টি পরিবহন নামের এক বাল্কহেডের শ্রমিক মহিবুল্লাহ ও জাকারিয়া ইসলামকে তারা পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে বৈদ্যেরবাজার ও চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। এ সময় চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা পুলিশের উপর টেঁটা, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় চালিভাঙা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাকসুদ (টেঁটাবিদ্ধ), কনষ্টেবল সোহাগ ও সাইদুর আহত হয়। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরা ২১ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ এসময় বারেকের ছেলে চাঁদাবাজ রানা ও সাজ্জাদকে আটক করে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে এএসআই মাকসুদ ও বাল্কহেডের শ্রমিক জাকারিয়া ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসবি জয়নব বৃষ্টি পরিবহন নামের বাল্কহেডের সুকানী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নৌপথে আড়াইহাজার উপজেলার মরিচাকান্দি এলাকা থেকে বালু ভর্তি বাল্কহেড নিয়ে তিনি রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার নলচর এলাকায় নৌ-চাঁদাবাজরা তার বাল্কহেডটি আটক করে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় চাঁদাবাজ চক্র আমাদের দুই শ্রমিককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। তিনি আরও জানান, এ পথে প্রতিদিন নৌ চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে। কোন নৌযানের শ্রমিক যদি চাঁদা দিতে অস্বীকার করে তাহলে চাঁদবাজ চক্রের সদস্যরা তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে। এ বিষয়ে মেঘনা থানার চালিভাঙা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলমগীর হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবত একটি নৌ-চাঁদাবাজ চক্র মেঘনা নদীতে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন নৌযানে চাঁদাবাজী করে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে এ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাল্কহেডে চাঁদা উত্তোলনের সময় এক বাল্কহেডের শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাদেরকে তারা পিটিয়ে আহত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা পুলিশের উপরই হামলা চালায়। এসময় টেঁটাবিদ্ধসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য ২১ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।