ইউএসএর আদলে সকল নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বয়
বহুমাত্রিক হুমকি মোকাবেলায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘জেটাক’ চালু
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, স্বৈরাচারী হাসিনার বিচার, রাজনৈতিক পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলাসহ বহুমাত্রিক হুমকি মোকাবেলায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চালু করা হয়েছে জয়েন্ট থ্রেট এসেসমেন্ট সেল জেটাক। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে এক ঘন্টা পরপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সকল গোয়েন্দা তথ্য মূল্যায়ন করে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হবে। প্রতিদিনই দেওয়া হবে সকল গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত বিশেষ প্রতিবেদন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে সকল গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই সেল। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম একই আমব্রেলার নিচ থেকে করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একাধিক গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এই সেল করার পর থেকে সকল গোয়েন্দা তথ্যগুলো সমন্বিত করে দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের গুরুতর পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল নিরাপত্তা ইউনিটের ও রাষ্ট্রীয় সকল গোয়েন্দা ইউনিটের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সম্প্রতি এই সেল গঠন সিদ্ধান্ত নিয়ে চালু করা হয়। জরুরিভাবে দৈনিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ছাত্র-শিক্ষক সংক্রান্ত, ধর্মীয় ও সংখ্যালঘু পরিস্থিতি, কূটনৈতিক, আন্তর্জাতিক, শ্রমিক সংক্রান্ত, অর্থনৈতিক ব্যাংক ও বীমাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সকল গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়ার তথ্য সমন্বয় করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। ২৪ ঘন্টায় এই সবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় তথ্য আপডেট নিয়ে বিশ্লেষণ করা হবে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বিদ্যমান নিয়ম গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানরা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের নিজস্ব রিপোর্ট আলাদা আলাদা ভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। ফলে রিপোর্ট ভিন্ন রকম হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। এজন্যে সকল গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপত্তা সংস্থা পাশাপাশি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড থেকেও প্রতিনিধি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সেল তৈরি করা হয়। একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সম্প্রতি আমেরিকা সফর করে সেখানকার গোয়েন্দা প্রতিবেদন উপস্থাপনের পদ্ধতির বিষয়ে অবহিত হন। যুক্তরাষ্ট্রের আদলে বাংলাদেশেও এ ধরনের একটি সমন্বিত সেল করলে এবং সমন্বিত প্রতিবেদন দিলে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের জন্য সহজ হয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্র জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এই সেলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নিষিদ্ধ গোপন সংগঠনের নাশকতার জঙ্গি হামলাসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহুবিধ হুমকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুকরণে বাংলাদেশেও একই ধরনের পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বিজিবি, র্যাব গোয়েন্দা ও আন্টিটেরিজম ইউনিটসহ নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে যুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক সংস্থার প্রতিনিধিরা সকাল আটটার মধ্যে সেলের বৈঠকে মিলিত হয়। প্রত্যেক বিভাগের প্রতিনিধি ছাড়াও সেনাবাহিনীর কর্নেল পদমর্যাদা এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে সকল গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো মূল্যায়ন করে একটি বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী প্রতি ঘণ্টায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অভিহিত করা হয়। প্রয়োজনে বিশেষ রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টাকে সরাসরি দেওয়া হয়।





