ড. আলী রিয়াজ উপদেষ্টার পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী নিয়োগ
বিলুপ্ত হওয়া জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. আলী রিয়াজকে সরকারের উপদেষ্টার পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বৃহস্পতিবার তার নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ড. আলী রিয়াজকে তাঁর বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই পদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি উপদেষ্টার পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আরও পড়ুন: বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে প্রধান উপদেষ্টার দোয়া কামনা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যমত কমিশনে ড. আলী রিয়াজ সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই কমিশন সংবিধান সংস্কারসহ ছয়টি পৃথক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা, সংশোধন প্রস্তাব প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির কাজ করে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর শেষ হয়। কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেন, "সনদ সরকারকে বোঝানো হয়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশের সংবিধান সংস্কারে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন: আমিরাতে বন্দি বাকি ২৪ বাংলাদেশি অচিরেই মুক্তি পাচ্ছেন
গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুদক এবং পুলিশ সংস্কারে ছয়টি পৃথক কমিশন গঠন করা হয়। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২ ফেব্রুয়ারি ছয় মাস মেয়াদী ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে কমিশনের কার্যক্রম শুরু করেন।
ঐকমত্য কমিশন ছয় সংস্কার কমিশনের ১৬৬ সুপারিশ নিয়ে মার্চে প্রথম দফার সংলাপ শুরু করে। ২২ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ৬২ সংস্কারে ঐকমত্য ঘোষণা করে সরকার। দ্বিতীয় দফার সংলাপে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২২ মৌলিক সংস্কারে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ঐকমত্য ঘোষণা করা হয়। এই ৮৪ সংস্কারের প্রস্তাব জুলাই সনদে প্রণীত হয়।
কমিশনের মেয়াদ আগস্টে এক মাস বৃদ্ধি করা হয় এবং ১৭ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ ওই দিন বলেন, "আমাদের অনেক স্রোত, কিন্তু মোহনা একটি। সেটি হলো গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। সেই স্বপ্ন ও প্রত্যাশার প্রথম পদক্ষেপ হলো জুলাই জাতীয় সনদ।" তিনি আরও বলেন, "এই অগ্রগতিতে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে, এবং রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মত ও পথের পার্থক্য থাকা স্বত্ত্বেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।"





