শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে সরকার পদক্ষেপ নেবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকার সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার পর সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলায় যুগান্তকারী রায় হয়েছে। এই রায় বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।” তিনি আরও জানান, ট্রাইব্যুনাল যে সাজা ঘোষণা করেছে, তা আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: ‘গোয়েন্দা টিম গঠন করেন, লোক সাপ্লাই দেব’ ওসিকে জামায়াতের প্রার্থীর মন্তব্যে বিতর্ক
তিনি বলেন, মামলার তিন আসামির মধ্যে দুইজনকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটিতে সাজার রায় দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শেখ হাসিনাকে দুই অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে এক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: লাভেলো আইসক্রিমের এমডি-চেয়ারম্যানসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রায় ঘোষণার সময় আদালতে আইনজীবী ছাড়াও জুলাই-আগস্টে নিহতদের কয়েকজন পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। এরপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের হয়। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল মামলার বিচারকাজ শুরু করে এবং একই দিনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও আসামি ছিলেন। মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসাবে জবানবন্দি দেন। পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে ছিল উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো।
মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় এবং ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষে তা সম্পন্ন হয়।
২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন রাখা হয় এবং পরে ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত হয়।





