যাত্রা শুরু করলো ভোটের গাড়ি ‘সুপার ক্যারাভান’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটকে সামনে রেখে দেশব্যাপী প্রচারণার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে দশটি ভোটের গাড়ি—‘সুপার ক্যারাভান’।
সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সুপার ক্যারাভানের এই যাত্রা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভিসা দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফিতা কেটে ভোটের গাড়ির যাত্রা উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট।
আরও পড়ুন: গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
তিনি বলেন, এই লক্ষ্য সামনে রেখে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান—দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। এসব গাড়ি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভোটাধিকার কারো দয়া নয়—এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “সুপার ক্যারাভান কেবল একটি গাড়িই নয়—এটি গণতন্ত্রের আনন্দবাণী বহনকারী বহর। এটি জানিয়ে দেবে আপনার একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং মনে করিয়ে দেবে যে নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।”
তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ—নতুন বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে থাকবে না ভয়, থাকবে না বাধা—থাকবে কেবল জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সরকার সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।”
তিনি বলেন, “আপনি দেশের মালিক। আগামী পাঁচ বছর দেশ কারা পরিচালনা করবে, তা আপনিই ঠিক করবেন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে চিন্তাভাবনা করে ভোট দিন।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের নির্বাচনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভোট রয়েছে—জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট। দীর্ঘ নয় মাস ধরে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের মাধ্যমে এই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে। জনগণ এই সনদ সমর্থন করলে দেশ আগামী বহু বছর নিরাপদে এগিয়ে যাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন, তবে গণভোটে অবশ্যই ‘হ্যাঁ’ ভোট দিন।”
সবশেষে তিনি বলেন, “চলুন, আমরা সবাই মিলে এই গণতান্ত্রিক যাত্রাকে সফল করি। চলুন, ভোট দিই—নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এবং নতুন পৃথিবীর জন্য।”





