ইজতেমায় হামলার প্রচারণা আছে, তবে ভয়ের কিছু নেই :জিএমপি কমিশনার

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রচারণা আছে, এখানে (ইজতেমা ময়দানে) হামলা হতে পারে। আমরা এটিকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। এটি হয়তো বা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দিকে ভয় দেখানোর জন্য, যাতে সমাবেশে লোকজন সমাগম না হয় সেটি করার জন্য হতে পারে। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ রাখবো, এটিতে ভয় পাওয়ার কিছু নাই।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জুমার নামাজের পর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে স্থাপন করা গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের স্থাপন করা কন্টোল রুমে ইজতেমার সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং এ তিনি এসব কথা বলেন।
কমিশনার বলেন, আমরা সুইপিং করেছি, মাঠে মধ্যে কোন বোম নাই। নিশ্চিত ভাবেই আমরা বলতে পারি। কিন্তু এরপরে কখনো ঢুকবে না সেটি আমরা ফেলে দিতে পারি না। আমরা তার জন্য চেকপোস্ট বসিয়েছি। তবে হামলার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। আমার মনে হয় না এটি কোন নির্ভরযোগ্য সোর্স। আমরা এটি খতিয়ে দেখবো। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি, আমরা এটিকে কোন থ্রেড মনে করছি না। সারা দেশে যেহেতু ডেভিল হান্ট চলছে এর আগেও আপনাদেরকে বলেছি ডেভিল হান্টকে এড়ানোর জন্য কিছু দুষ্কৃীতিকারী এ ইজতেমা মাঠকে ব্যবহার করতে, এখানে এসে আশ্রয় নিতে পারে, এখানে এসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে। সেই ব্যাপারে আমাদের লক্ষ্য আছে। আমরা মুরুব্বিদের বলেছি আপনাদের নজরে যদি কোন কিছু দুষ্কৃীতিকারী পরে আপনারা আমাদের জানাবেন আমরা ব্যবস্থা নিবো, আপনারা আমাদের হাতে তুলে দিবেন।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই এসেছেন, এখানে বিশ্বের দ্বিতীয় সমাবেশ, সেটি হলো ইজতেমা। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এখানে জড়ো হচ্ছেন। আজকে জুমার দিন, পাশাপাশি আজকে রাতে শবে বরাত। তাই এটি একটি গুরুত্ব বহন করে। আর গুরুত্ব বহন করার জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে প্রচুর সমবেত হবে। সমবেত হলে তাদের নিরাপত্তা দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমরা পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক সতর্ক আছি, আমরা তাদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে যারা মাঠে মুরুব্বিরা আছেন তারাও তাদের বলান্টিয়ার সার্ভিসের জন্য প্রচুর সংখ্যক নিরাপত্তা প্রহরী রেখেছেন, তারাও নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। আশা করি নিরাপত্তার কোন ঘাটতি হবে না। আমরা চারিদিকে লোক রেখেছি আছে, আমরা প্রহরা রেখেছি, আমরা চেকপোস্ট রেখেছি আমরা সিসি ক্যামেরায় লক্ষ্য রাখছি, আমরা ড্রোনের মাধ্যমে লক্ষ্য রাখছি।
তিনি আরো বলেন, তবে একটি কাজ আমরা করতে চাই, রাস্তাগুলো খালি রাখতে চাই। যদি কোনো ঘটনা ঘটে, এটি আমরা মাথা থেকে ফেলে দিচ্ছি না। আমরা যেন দ্রæত ইভাকুয়েট করতে পারি, ইন্টারভিন করতে পারি, সেই ব্যবস্থা সতেজ রাখতে চাই। আমরা ফায়ার ব্রিগেডের সাথে আলোচনা করেছি তারা সতেজ আছে। আমরা প্রত্যেককে একসাথে কাজ করতে চাই, একই বডিতে কাজ করতে চাই। কাজ করার মাধ্যমে এই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেহেতু একসাথে হয়েছে এখানে তারা ইবাদতের জন্য হয়েছে। আজকে শবে বরাতে দিন, দেশের জন্য দোয়া করবে, সকলের জন্য দোয়া করবে তারা যেন নির্বিঘ্নে দোয়া করতে পারে সেই ব্যবস্থা যে সকলের সহযোগিতায় করতে পারি।
তুরাগতীরে দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত
গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তুরাগ নদের তীরে ইজতেমা ময়দানে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার দুপুর দেড়টায় খুতবা শুরু হয়। এরপর নামাজ ১টা ৫০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে ১টা ৫৫ মিনিটে শেষ হয়। জুমার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর দেড়টায় খুতবা শুরু হয়। দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে ১টা ৫৫ মিনিটে নামাজ সম্পন্ন হয়। লাখো মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নেন বলে তিনি দাবি করেন।
এবারই প্রথম শবে বরাতে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা
দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা রাতে টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমার ময়দানে একসঙ্গে পবিত্র শবে বরাত পালন করবেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দেশ থেকে মুসল্লিরা এজতেমা ময়দানে জড়ো হন।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা একসঙ্গে হয়েছেন, এখানে তারা ইবাদতের জন্য এসেছেন। আজ শবে বরাত, তারা দেশের জন্য দোয়া করবেন, সকলের জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন নির্বিঘ্নে দোয়া করতে পারেন সকলের সহযোগিতায় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।