হিট স্ট্রোকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে

প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, ১১ মে ২০২৫ | আপডেট: ৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, ১১ মে ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গত কয়েক দিনের প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে।  ঘরের বাইরে বের হয়েই মানুষ হিট জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল সারাদেশের মানুষ। কোথাও স্বস্তি নেই। ভোর কিংবা রাতেও গরমের তেজ কমছে না। টানা তিন দিন ধরে এমনই দহন জ্বালায় জ্বলছে দেশ। নেই বৃষ্টির দেখা। শনিবার ঢাকায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

আরও পড়ুন: ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে, থাকতে পারে হালকা বৃষ্টি

সিলেট ও সুনামগঞ্জের আশপাশে ছাড়া অনেক এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৈশাখের শেষ বেলায় এসে দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে তিন দিনের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ছুটির দিনে সকাল থেকেই তেতে পুড়ে ছিল রাজধানী। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রার এ ঊর্ধ্বগতি আজ রবিবারও থাকতে পারে। তবে, আশার খবর হলো সোমবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহীনুর ইসলাম বলেন, তাপপ্রবাহ ১২ মে কিছুটা প্রশমিত হতে পারে। বৃষ্টির ধারাটা ১২ তারিখের পরে আস্তে আস্তে বাড়বে। এটা যখন পূর্ণ মাত্রায় যাবে তখন তাপপ্রবাহ ধীরে ধীরে কমে আসবে। ১৬ থেকে ১৮ মের মধ্যে তাপপ্রবাহ মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে আর্দ্রতা কমে আসে। বাতাসের জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম। সন্ধ্যায় তাপমাত্রা কমে আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্দ্রতা বাড়বে। পর্যাপ্ত পরিবেশ তৈরি না হলে বৃষ্টি হবে না। মার্চ, এপ্রিল, মে এই সময় যে বৃষ্টিটা হয় তা কালবৈশাখী ঝড় থেকে হয়।

আরও পড়ুন: মৌসুমী বায়ু সক্রিয়, ৮ বিভাগেই বৃষ্টির আভাস

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সারাদেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও মৌলভীবাজার জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ রবিবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। 

মেহেরপুরে তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরমে মাঠে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ। তবে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত রোদের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী, সকালের সূর্য উদয় হচ্ছে আগুনের হল্কা নিয়ে। পুড়ছে মানুষ পুড়ছে প্রকৃতি। বিপর্যস্ত জনজীবন। দুপুরের মধ্যেই আবহাওয়া অসহনীয় হয়ে উঠছে। কদিন ধরেই তাপমাত্রার পারদ উঠছে। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করছে। গতকাল শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

নীলফামারী
তীব্র তাপদাহে নীলফামারীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড রোদের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে।

মাঠে কাজ করতে পারছেন না কৃষিশ্রমিকরা।  একই অবস্থা রিকশা ও ভ্যানচালকদের ক্ষেত্রেও। অতিরিক্ত গরমে ঘন ঘন তৃষ্ণা লাগার পাশাপাশি শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যে।

সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে নীলফামারী জেলায় মাঝারি ধরনের তাপদাহ বিরাজ করছে। শনিবার (১০ মে) দুপুর পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দমমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।