বিচিত্র বিয়ে

জয়পুরহাটে নানা আয়োজনে বট-পাকুড় গাছের বিয়ে

বাংলাবাজার পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:২২ অপরাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২৩ | আপডেট: ১১:২২ পূর্বাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাট শহরের তাজুর মোড় এলাকায় মানুষের বিয়ের মতই বট ও পাকুড় গাছের মধ্যে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে গায়ে হলুদ ও মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুষ্ঠানও হয়। তাজুর মোড়ে অবস্থিত খাবার হোটেল ব্যবসায়ী শ্রী ধীরেন চন্দ্র মহন্ত এই ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করেন।

বিলি করা বিয়ের দাওয়াত কার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে, বধূ সেজে কুমারী বটগাছ, পিতা শ্রী ধীরেন চন্দ্র  মহন্ত, মাতা শ্রীমতি ঝরণা রানী মহন্ত, ঠিকানা সোনারগাঁ (তাজুর মোড়), জয়পুরহাট। বর বেশে শ্রীমান পাকুড় গাছ, পিতা শ্রী বাবু দাস, মাতা শ্রীমতি মুণি দাস, ঠিকানা সোনারগাঁ (তাজুর মোড়), জয়পুরহাট। 

আরও পড়ুন: শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত, জনজীবন বিপর্যস্ত, লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা

অনুষ্ঠান সূচির তালিকায় ছিল শুক্রবার সকালে গায়ে হলুদ, দুপুরে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বিবাহ লগ্ন। বিবাহ বাসর কনের পিত্রালয়, নিজ বাসভবনে প্রীতিভোজ রাত সাড়ে আটটায়। বিয়ের কার্ডে প্রধান অতিথি হিসেবে জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, বিশেষ অতিথি জয়পুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কালীচরণ আগরওয়ালা, জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (নাম নেই), জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক সুমন কুমার সাহা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল দেওয়ান মিলন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী সরদার।

তাজুর মোড়ে সড়কের পূর্বপাশে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজক শ্রী ধীরেন চন্দ্র মহন্ত বলেন, প্রকৃতির মঙ্গলের জন্য বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করেছি। আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী যেভাবে মানুষের বিয়ে হয় একইভাবে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে হবে। ১২০ জনকে দাওয়াত কার্ড বিলি করেছি। তবে আমন্ত্রিত থাকছেন প্রায় এক হাজার মানুষ।

আরও পড়ুন: জিম্মি করে মুক্তিপন আদয়ের অভিযোগে বিএনপি নেতাসহ আটক ৫

রাতে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরামিষ ভোজও খাওয়ানো হয়। বিগত ৪০ বছরের মধ্যে জয়পুরহাট শহরে এরকম ব্যতিক্রমী বিয়ে হয়নি বলেও জানান তিনি।

ধীরেন চন্দ্র মহন্তের স্ত্রী ঝরণা রানী মহন্ত বলেন, বট গাছ আমার মেয়ে। আমি মেয়ের মা। ছেলে পাইকড় গাছের মা শ্রী মুনি দাস। আমরা প্রতিবেশী। বিয়ে ঘিরে আমরা আনন্দ উল্লাস করছি।

জয়পুরহাটের সাংস্কৃতিক কর্মী লালন হোসেন বলেন, বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে পুরনো সংস্কৃতি। এটি এখনও কিছু ব্যক্তি ধরে রেখেছে। তবে এই আয়োজনে হাজার মানুষের সমাগমে সম্প্রীতি বজায় থাকবে।

বট-পাকুড় গাছের বিয়ের পুরহিত বলেন, অনেক রীতি নিয়ম মেনে, মানুষের বিয়ের মতই বট ও পাকুড় গাছের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই বিয়ের মাধ্যমে পরলোকগমনের পর শান্তিতে থাকবে।