রংপুরে শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে আবু সাঈদ পরিবারের মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে রংপুর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বেগবান হওয়ায় ১৬ জুলাই রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যু্বলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলা, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখভাগের সৈনিক আবু সাঈদের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায়। আবু সাঈদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় পরের দিন ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী ওই থানার উপপরিদর্শক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
আরও পড়ুন: ঢাকা ১৯ আসনে দুই ইউনিয়ন বহাল রাখার দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তগণ বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এজাহারে বলা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে কং/১১৮৬ সোহেল তার নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
মামলার এজহারে সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়, বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এরপর সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার এজহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার হলে রংপুর আবারও উত্তাল হয়ে ওঠে। আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন নাগরিক সমাজ। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়।