পিরোজপুরের ইব্রাহীম অভাবে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় সংসারের দায়ীত্ব নিয়েছেন কাঁধে

Any Akter
মোঃ তরিকুল ইসলাম, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, ১০ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, ০৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বলতে পারেন না কথা, শোনেন না কানে। আর মনের ভাব আদান প্রদান করেন ইশারা-ইঙ্গিতে। এরকম শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সংসারের বোঝা হওয়ারই কথা। কিন্তু পিরোজপুরের ইব্রাহীম অভাবে বাধ্য হয়েই একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় সংসারের দায়ীত্ব নিয়েছেন কাঁধে। গভীর পানির নিচ থেকে মাটি তুলে সেগুলো বিক্রি করেই সংসার চালান তিনি। 

প্রতিদিন সকালে নিজের নৌকা নিয়ে বিলের মধ্যে ছুটে যান ইব্রাহিম। এরপর ৫-৬ ফিট পানির নিচ থেকে মাটি তুলে সেগুলো নৌকায় তোলেন। মাটি কাটার জন্য ব্যবহার করেন লম্বা একটি কাস্তে। পানির নিচ থেকে মাটি কেটে নৌকায় তোলা এবং ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সব কাজগুলো একাই করেন ইব্রাহিম। কাজ করার সময় পানি থেকে একটি চাকা তুলতে কমপক্ষে ২-৩ বার ডুব দিতে হয় তাকে। প্রায় ৪০ মিনিট মাটি কাটার পর নৌকাটি পূর্ণ করতে সক্ষম হয় সে। আর প্রতি নৌকা মাটির বিক্রি করে আয় করেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০-২২ দিন কাজ করা সম্ভব নয়। তবে ইব্রাহিম যে জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে এজন্য তাকে জমির মালিককে টাকা পরিশোধ করতে হয়। তা থেকে আবার নৌকা ভাড়া

আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত


দিতে হয় ১০০ টাকা। ১ কাঠা জমির মাটি ক্রয়ের জন্য জন্য তাকে পরিশোধ করতে হয় ৫-৮ হাজার টাকা। তবে শর্ত থাকে শুধুমাত্র এক বারই জমি থেকে মাটির সংগ্রহ করা যাবে। এক কাঠা জমি থেকে সে সর্বোচ্চ ৭০ নৌকা মাটি সংগ্রহ করতে পারে। 

আরও পড়ুন: সাভারে পাচারকালে পিকআপসহ সাড়ে ৬ লাখ টাকার টিসিবি’র পণ্য জব্দ, আটক-১


ইব্রাহিমের ভাই ইয়াসিন আরাফাত বলেন,  প্রায় সারা বছরই মাটি বিক্রির কাজ করতে পারলেও, শীতের মৌসুমে বিলের পানি কমে যাওয়ায় তখন অনেকটাই বেকার হয়ে পড়ে ইব্রাহিম। তখন অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই সংসার চলে তার ৫ সদস্যের পরিবারের। তবে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই পরিবারের সদস্যদের। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে নিজেই পরিবারের জন্য উপার্জন করলেও, ভবিষ্যতে ইব্রাহিমের শারীরিক সমস্যার বিষয় উদ্বিগ্ন তারা।

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার উত্তর কলারদোয়ানিয়া গ্রামের সাদেক মিয়ার ৪ ছেলের মধ্যে ইব্রাহিম দ্বিতীয়। প্রায় ৮ বছর পূর্বে বিয়ে করে সে। অদম্য এই যুবক বিকল্প কোন কাজের সুযোগ পেলে হয়তোবা ঝুঁকিপূর্ণ এই পেশা থেকে নিজেকে বের করে সুস্থ্য স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারবে এমনটাই প্রত্যাশা তার স্বজনদের।