বাউফলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

Sadek Ali
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:১২ অপরাহ্ন, ১০ মে ২০২৫ | আপডেট: ২:২৫ অপরাহ্ন, ১০ মে ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালাইয়া রব্বানিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম আবদুল হাই-এর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ, পেশাগত অসদাচরণসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবর শিক্ষকদের পক্ষে অভিযোগ দাখিল করেছেন একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মোঃ মহিবুল্লাহ।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ১৯৯৯ সালে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকে এ.এস.এম আবদুল হাই একক কর্তৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের এবং গত ফ্যাসিষ্ট সরকারের রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। অভিযোগ রয়েছে, অত্র প্রতিষ্ঠানে তার অনুগতদের মনোনয়ন দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করেছেন। যাতে তার কর্মকান্ডে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।

আরও পড়ুন: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পদ হারালেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দল সভাপতি আফরোজা সীমা

কামিল মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর বিভিন্ন খাত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে থাকে। তবে এসব অর্থের নেই কোন স্বচ্ছ হিসাব। ২০২২ সালের বার্ষিক পরীক্ষার শেষে পরীক্ষার ফি বাবদ মোট ৬৪২,৭৩০ টাকা আদায় হয়। ওই টাকা থেকে শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ২০% হারে শিক্ষকদের মোট ১,১২,০৯০ টাকা  বিতরণ করা হয়। কিন্তু শিক্ষকদের দেয়া অর্থ প্রদানের ভাউচারে ৬,৪২,৭৩০ টাকা দেখানো হয়েছে। বলেও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষিকা জানিয়েছেন তার বেতন স্কেলের ২০% হারে ৩,২০০ টাকা দেয়া হলেও ভাউচারে দেখানো হয়েছে ২৩,২০০ টাকা।  একই ধরনের অভিযোগ করেছেন অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।

আরও জানাযায়, সরকারি বরাদ্দকৃত টিউশন ফি বছরে দুইবার আসলেও তার কোনো স্বচ্ছতা নেই। শিক্ষকরা এর কোনো অংশ পাননি এবং মাদ্রাসায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন নেই। তবে উন্নয়নের নামে শুধু অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

আরও পড়ুন: কাপাসিয়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে বিএনপির উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

এছাড়া নূরানি বিভাগের ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ আতাউল্লাহ এবং অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল হাই মিলে প্রতিষ্ঠানের এ সব অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

শিক্ষকরা জানায়, বিভিন্ন সময় নতুন বেতনক্রম, টাইম স্কেল, বি.এড স্কেল ও এমপিও শিট সংশোধনের জন্য জোর করে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়েছে। এমনকি প্রাথমিক শ্রেণির বই বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও তুলেছেন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর শিক্ষকবৃন্দের এক বিশেষ সভায় অধ্যক্ষ তার ‘ভুল স্বীকার’ করে কিছু প্রতিশ্রুতি দেন, যার লিখিত দলিলে শিক্ষকদের স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগকারী শিক্ষকরা এই বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল হাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”

অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মাদ আরেফীন বলেন,অভিযোগটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহসিন উদ্দীন কে দেয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়টি দেখবেন।