অস্বাভাবিক জোয়ারে কমলনগরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অস্বাভাবিক জোয়ারে কমলনগর নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ২ উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় জোয়ারের তীব্রতায় বেড়ি বাঁধের বাহিরের মানুষের বাড়িঘর দোকান-পাটের মালামাল ভেসে যায়। ৩ নং সতর্ক সংকেত বলবৎ থাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাময়িকভাবে কমলনগর রামগতি উপজেলার সাথে সকল ধরনের নৌ-যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে নিম্নচাপের প্রভাবে ধমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। নদী ও সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। দুপুরের জোয়ারে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মাতাব্বর হাট সহ নিম্মাঞ্চল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: নতুন বছরের প্রথম দিন পর্দা উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার, উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
পাটোয়ারীর ঘাটের বেড়ীর বাইরে অবস্থিত রাস্তার দুপাশে ছোট ছোট দোকানগুলো পানিতে ডুবে যায়। জোয়ারের তীব্র স্ত্রোতে ১০ টি দোকান ভেসে যায়।পাটোয়ারী হাট ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান, জোয়ারের স্রোতে ও ঢেউয়ের আঘাতে নাছির টি স্টোর, খালেকের চা দোকান সহ ঘাটের ৫-৬টি দোকান ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুপুর ১১ টার পর আসা জোয়ারের এসব ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘাট এলাকার প্রধান সড়কের উপর তিনফুট উচ্চতায় পানি উঠে। জোয়ারের সাথে সাথে ঢেউয়ের তীব্রতা বেশি থাকায় ঘাটের এসব দোকান পাঠ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত জোয়ারে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। রাতের জোয়ারে আরো বেশী প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চর ফলকন ইউনিয়নের মেম্বার মোসলে উদ্দিন জানান, ইউনিয়ন এর ১,২,৩ ও ৭,৮,৯ ওয়ার্ড সহ অধিকাংশ এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে যায়। মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। নামার বাজার এলাকার ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, নামার বাজারসহ আশপাশের সকল রিসোর্ট তলিয়ে গেছে। রাতে আরেকবার জোয়ার হবে। জোয়ারে সব তলিয়ে যাচ্ছে দেখে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: মুক্ত গণমাধ্যম যেন দায়িত্বহীন না হয়: এম আব্দুল্লাহ
রামগতির বাসিন্দা আলী আকবর বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় রামগতিতে। দিনে ও রাতে দুবেলায় জোয়ারে ইতোমধ্যে ইসলাম গঞ্জ ও কালকিনি গুচ্ছগ্রাম, পূর্বাঞ্চল গ্রাম, মতির হাটসহ কমলনগর উপজেলার সবগুলো গ্রামে পানি ঢুকেছে।
এদিকে সকাল থেকে উপজেলার চর মাটিন চর ফলকন সাহেবের হাট ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের নিম্মাঞ্চলসহ চারপাশের নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সৃষ্ট নিম্মচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে রামগতির সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন, বলেন, কমলনগরে বিভিন্ন অঞ্চলে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ পেলেই দুর্গতদের মাঝে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে





