নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার বর্ষপূর্তি, এখনো অধরা ১২২ আসামি

Sanchoy Biswas
আশিকুর রহমান, নরসিংদী
প্রকাশিত: ৪:৫৬ অপরাহ্ন, ২০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৫:১৪ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার একটি দল নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে আলোচিত সব মামলার আসামি ও জঙ্গি সদস্যসহ ৮২৬ বন্দিকে ছিনিয়ে নেয়। এসময় লুট করা হয় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ৮ হাজার গুলি। সেই সাথে হামলাকারীরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ২৯ হাজার মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। আলোচিত এই ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পলাতক রয়েছে ১২২ জন আসামি। উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ৩৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬ হাজারের বেশি গুলি। হামলার সময় পুড়ে যাওয়া ২৯ হাজার মামলার নথিপত্র না থাকায় বন্দিদের পরিচয় ও মামলার সঠিক তথ্য ঘিরে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ বন্দির মধ্যে জেলা প্রশাসনের প্রচারণায় সাড়া দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ৬৪৬ জন বন্দি। পলাতক থাকা বাকি ১৮০ জন বন্দির মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় ৫৮ জনকে। বাকি ১২২ জন রয়েছে অধরা। আর লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫১টি অস্ত্র উদ্ধার হলেও কোনো হদিস মিলছে না বাকি ৩৪টি অস্ত্রের। হামলার পর কিছুদিন বন্দিদের আশপাশের জেলা কারাগারে পাঠানো হলেও মেরামত শেষে পুরোদমে চালু হয়েছে জেলা কারাগারের কার্যক্রম। তবে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি বন্দি থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বন্দি ও কারা কর্তৃপক্ষকে। ৩৪৪ জন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই কারাগারে বর্তমানে রাখা হয়েছে ৯০০ জনের বেশি বন্দি। গাদাগাদি করে বন্দিদের রাখার কারণে বয়স্ক, অসুস্থ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা স্থান বরাদ্দ করা যাচ্ছে না। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে, রোগী বাড়ছে। কারাগারের অবকাঠামোও আছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো মেরামত করা হলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। পলেস্তারা খসে পড়ছে, দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পে সড়ক উঁচু হওয়ায় কারাগারের দেয়াল অপেক্ষাকৃত নিচু হয়ে গেছে। বৃষ্টির সময় সড়কের পানি ভেতরে ঢুকে পড়ে, এতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মানববন্ধন

নরসিংদীর জেল সুপার মো. শামীম ইকবাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২৯ হাজার মামলার নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় কারাগারে বন্দিদের মামলার ধরন, সাজাভোগের সময় ও পরিচয় শনাক্তে সমস্যা হচ্ছে। আদালতের সহায়তায় এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বন্দির সংখ্যা ধারণক্ষমতার তুলনায় তিন গুণ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ সুযোগপ্রাপ্ত আসামি ছাড়া জেলার সব আসামিকেই এখানে রাখা হচ্ছে। ঘনবসতির কারণে শ্রেণিবিন্যাস ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কিছু বন্দিকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের পরিকল্পনা চলছে।’