সাভারে ১ বছর পর সিকিউরিটি গার্ড রিমন হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

ঢাকা জেলার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় এমই বিডি টেক লিমিটেডের সিকিউরিটি গার্ড রিমন হত্যার ১ বছর পর রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার সময় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিনুর কবির।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
এ সময় তিনি বলেন, নিহত রিমন সাভারের হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ি এলাকার এমই বিডি টেক লিমিটেড ফ্যাক্টরিতে প্রায় দেড় বছর ধরে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতো এবং তিনি রাতের বেলায় উক্ত ফ্যাক্টরির ভেতরে ঘুমাতেন। গত ৩-৮-২০২৪ তারিখ রাত আনুমানিক ৯টার সময় রিমন প্রতিদিনের ন্যায় ঘুমানোর জন্য ফ্যাক্টরিতে আসেন। পরবর্তী দিন অর্থাৎ ৪-৮-২০২৪ তারিখ সকাল আনুমানিক ৭টার সময় রিমনের এক সহকর্মী আব্দুল মুন্নাফ শেখ কাজ করার জন্য কোম্পানিতে আসার পর দেখতে পান রিমনের মৃতদেহ উলঙ্গ অবস্থায় রক্তাক্ত হয়ে ফ্যাক্টরির ফ্লোরে পড়ে আছে। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দ্বারা গুরুতর জখমের চিহ্ন আছে এবং ফ্লোরের চারপাশ রক্ত মাখা অবস্থায় আছে।
তিনি আরও জানান, রিমনকে হত্যা করার পর তার ব্যবহৃত দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন, যাতে ব্যবহৃত সিম-০১৫৪০০৩৮৫৩৫, ০১৭৪২৪০৯৪৬৪ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফ্যাক্টরির মালিক আবু সালেহ মুসা রিমনের হত্যার বিষয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিমনের মৃতদেহ দেখতে পান এবং রিমনের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা হয়।
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
তিনি বলেন, এছাড়াও দীর্ঘদিন পার হলেও মামলাটির রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও গ্রেপ্তার কার্যক্রমের জন্য পরবর্তীতে এসআই চম্পক বড়ুয়ার কাছে অর্পণ করা হয়। এসআই চম্পক বড়ুয়া মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করার পর শুরু থেকেই অত্র মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহসহ সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন। তথ্য সংগ্রহকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন যে, অজ্ঞাতনামা লোকজন ফ্যাক্টরিতে চুরি করার সময় সিকিউরিটি গার্ড রিমন হোসেন দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে তারা ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে।
তিনি জানান, পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময়ের পর অত্র মামলায় আসামি মো. মানিক মোল্লা (৩৮)-কে নিজ বাড়ি থেকে গতকাল রাত ১টা ১০ মিনিটের সময় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার হেফাজত থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট জব্দ করা হয় যা ভিকটিম রিমনকে হত্যার পর তার কাছ থেকে নিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে আসামি মো. মানিক মোল্লার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ি এলাকা থেকে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের সময় হত্যার সঙ্গে জড়িত অপর আসামি ভোলা সরকার ওরফে মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. মানিক মোল্লা (৩৮) বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন এবং অপর আসামি ভোলা সরকার ওরফে মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪০)-কে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. মানিক মোল্লা (৩৮)-এর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অত্র মামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর দুইজন আসামি সাইফুল ইসলাম (৩৫), মো. হৃদয় আহমেদ (২৭)-কে ২১-৯-২০২৫ তারিখ নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।