৭১–এর ঘাতকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার
মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, এবারের বিজয় দিবসের অন্যতম অঙ্গীকার হলো ১৯৭১–এর ঘাতক ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপি প্রার্থী মাসুদ
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন,৫৪ বছর পর, বিশেষ করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা উচ্ছ্বাস নিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে বলতে হচ্ছে—স্বাধীনতার বিরোধী শক্তির আস্ফালনের মধ্যেই আমাদের এই বিজয় উৎসব পালন করতে হচ্ছে।
তবে জাতীয় স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে মানুষের অংশগ্রহণ দেখে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন,এখানে দাঁড়িয়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃত অর্থেই বিজয় উল্লাসের জন্য প্রস্তুত। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আমাদের কোনোভাবেই পিছু হটাতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় তরুণ প্রজন্ম ৭১–এর ঘাতকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে—এটাই তার প্রমাণ।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবস উপলক্ষে এনসিপির বিজয় র্যালী
তিনি বলেন,এবার ২০২৫ সালের বিজয় দিবসে আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার হবে এই ঘাতকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। ১৯৭১–এর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘোষিত বাংলাদেশের ঘোষণাপত্রে আমরা যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের কথা বলেছিলাম, ১৯৭২ সালের সংবিধানেও যার প্রতিফলন ছিল—গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র—৫৪ বছরেও ক্ষমতাসীনরা তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রিন্স বলেন,আমাদের আবার মুক্তিযুদ্ধের পুনর্চেতনায় জাগ্রত হয়ে সেই পথেই এগোতে হবে। সেই পথের অন্যতম শর্ত হলো চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
তিনি অভিযোগ করেন,এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা মহল নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আজকের মহান বিজয় দিবসে আমরা সরকার, নির্বাচন কমিশন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দল ও সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই—মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ যেন পথ না হারায়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগ্রত রেখে ১৯৯০ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে আগামী ফেব্রুয়ারিতে যেন যথাসময়ে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এর মধ্য দিয়েই আমরা ৭১–এর ঘাতক ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে রুখে দাঁড়াতে পারব এবং একই সঙ্গে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে অগ্রসর হতে পারব।
এ সময় সিপিবির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মী তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।





