বড়দিনের ছুটিতে সাজেকে পর্যটকের ঢল, হোটেল, রিসোর্টে কক্ষ সংকট
বড়দিনের ছুটি, সাপ্তাহিক বন্ধ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা–পরবর্তী ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ঢলে মুখর হয়ে উঠেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটনকেন্দ্র। বছরের শেষ সময়ে পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে ভ্রমণে বের হওয়ায় পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
অতিরিক্ত পর্যটকের চাপের কারণে সাজেকের হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে কক্ষ সংকট দেখা দিয়েছে। আগাম বুকিং না থাকায় অনেক পর্যটককে রাত কাটাতে হচ্ছে রিসোর্টের বারান্দা, ক্লাবঘর, অফিসকক্ষ কিংবা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে। আবার থাকার জায়গা না পেয়ে অনেকেই দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: প্রিয় নেতাকে একনজর দেখতে কনকনে শীতে স্মৃতিসৌধে নেতাকর্মীদের ঢল
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সাজেকের প্রায় ১০০টি রিসোর্ট ও কটেজে সর্বোচ্চ চার হাজার পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) অন্তত সাড়ে চার হাজার পর্যটক সাজেকে পৌঁছান। এদের বড় অংশের কোনো কক্ষ বুকিং ছিল না। ফলে অনেক পর্যটক বাধ্য হয়ে খাগড়াছড়ি শহরে ফিরে যান।
সাজেকের সাম্পারি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক যুগেশ্বর ত্রিপুরা বলেন, চলতি মৌসুমে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক এসেছেন। তাদের ছোট-বড় ১১টি কটেজের সব কক্ষ শনিবার পর্যন্ত আগেই বুকিং রয়েছে। একই তথ্য জানান খাস্রাং রিসোর্টের ব্যবস্থাপক সুব্রত চাকমা। তিনি বলেন, এত বেশি পর্যটক আগে কখনো আসেননি, এতে পর্যটনসংশ্লিষ্টরা আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার, আটক ২
রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান, কক্ষ বুকিং ছাড়া আসা শতাধিক পর্যটককে ক্লাবঘর, অফিসকক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শীতের মধ্যে কেউ যেন খোলা আকাশের নিচে না থাকে, সে চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি হয়ে সেখানে যাতায়াত সহজ। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে খাগড়াছড়ি পৌঁছে সেখান থেকে চান্দের গাড়ি, জিপ, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে সাজেকে যেতে হয়।
পর্যটনসংশ্লিষ্টরা জানান, বড়দিনের ছুটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবারের জন্য অধিকাংশ কক্ষ তিন দিন আগেই বুকিং হয়ে যায়। শুক্রবার ও শনিবারের জন্যও সব কক্ষ আগেই বুকড। এই দুই দিন পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বরিশাল থেকে পরিবার নিয়ে সাজেকে আসা আবির রহমান বলেন, কক্ষ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত খাগড়াছড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে। খাগড়াছড়িতেও ভালো হোটেল না পেয়ে এক স্বজনের বাসায় রাত কাটাতে হয়েছে।
পর্যটকের চাপের কারণে পরিবহন সংকটও দেখা দিয়েছে। খাগড়াছড়ি-সাজেক গাড়ি কাউন্টারের লাইনম্যান সৈকত চাকমা জানান, তাদের সমিতির চার শতাধিক গাড়ি শুক্র ও শনিবারের জন্য আগেই বুকিং হয়েছে। এ অবস্থায় বাইরের যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে সাজেকে যাচ্ছেন অনেক পর্যটক।
খাগড়াছড়ি ট্যুরিস্ট পুলিশের জোন ইনচার্জ জাহিদুল কবির বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সাজেকসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ২৪ ঘণ্টা টহল জোরদার করা হয়েছে।





