আতঙ্কে দেশ: ককটেল বিস্ফোরণ, নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

Any Akter
মতামত ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ন, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৫:৩৬ অপরাহ্ন, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশজুড়ে এক অজানা আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম, জেলা থেকে উপজেলা— কোথাও যেন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। প্রতিদিন সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে ককটেল বিস্ফোরণ, মিছিল, সংঘর্ষ, আগুন ও আতঙ্কের খবর। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই অস্থিরতা যেন আরও বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে— এ পরিস্থিতিতে দেশ কোথায় যাচ্ছে?

দেশবাসীর আতঙ্কের মূল কারণ শুধু বিস্ফোরণের শব্দ নয়, বরং এর পেছনের অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিত। মানুষ অফিসে যাচ্ছে ভয়ে, শিশুরা স্কুলে যেতে সংকোচ বোধ করছে, বাজারে কেনাকাটাও যেন এক ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যে সহিংসতা চলছে, তা জনমানসে এক গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন: দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া, ‘ত্যাগ, নির্যাতন ও আপোষহীনতার অনন্য প্রতীক’

প্রতিবার ঘটনার পরই দেখা যায় পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হচ্ছে, তদন্তের আশ্বাস দিচ্ছে, কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করছে— কিন্তু এর পরিণতি কোথায়? জনগণের চোখে প্রশ্ন, এই পদক্ষেপগুলো কি যথেষ্ট?

নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রে “প্রতিক্রিয়াশীল” বলে মনে হচ্ছে— অর্থাৎ, ঘটনা ঘটার পর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, প্রতিরোধমূলক তৎপরতা নয়।

আরও পড়ুন: বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে বন্দর চুক্তি: জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে প্রয়োজন দূরদর্শী বাস্তবতা

এদিকে সামনে জাতীয় নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু বর্তমান সহিংসতা ও আতঙ্কের মধ্যে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো কতটা সম্ভব, তা নিয়ে জনমনে বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পরিক দোষারোপে ব্যস্ত, আর সাধারণ মানুষ পড়ছে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার ফাঁদে।

দেশের এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো সংলাপ, সহনশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ কঠোরতা। রাজনীতির মাঠে সহিংসতা নয়, প্রজ্ঞার প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত।

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে দ্রুত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে আসে এবং আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

আজকের এই সময়ে সবচেয়ে বড় চাহিদা হলো নিরাপত্তা ও স্বস্তি। দেশবাসী আর ককটেলের শব্দ শুনতে চায় না, তারা শুনতে চায় ভোটের, গণতন্ত্রের ও উন্নতির শব্দ। এখন সময়— আতঙ্ক নয়, আস্থার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার।