আইন, ন্যায়বিচার ও গণঅধিকার রক্ষার আহ্বান

উসমান হাদী গুলিবিদ্ধ: সন্ত্রাসীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলার এখনই সময়

Sanchoy Biswas
এম এফ ইসলাম মিলন
প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৮:০৩ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

উসমান হাদীর ওপর নৃশংস হামলা শুধু একটি ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে চালানো সহিংসতা নয়- এটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, রাজনীতি ও জনজীবনের ওপর এক প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ। এমন ঘটনার মাধ্যমে একটি উন্মত্ত সন্ত্রাসী চক্র আবারও প্রমাণ করেছে যে তারা ভয়, আতঙ্ক ও কিলিং পলিটিক্সের মাধ্যমে রাজনীতি ও সমাজজীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।

এ ধরনের প্রবণতা যে কোনও সভ্য রাষ্ট্রের জন্য গভীর হুমকি। রাষ্ট্র যদি কঠোরভাবে এমন শক্তিগুলোকে আইনের আওতায় না আনে, তবে "অন্ধকারের রাজনীতি" ফের জাঁকিয়ে বসতে সময় লাগবে না।

আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা- প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

১. সন্ত্রাসীদের বিষদাঁত আইনের মাধ্যমেই উপড়ে ফেলতে হবে:

রাষ্ট্রকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে-

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মান: চ্যালেঞ্জ ও প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সেনাবাহিনীর অবদান

যে কেউ সহিংসতা ছড়ালে, অস্ত্র হাতে তুলে নিলে, রাজনৈতিক মতের দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যার চেষ্টা করলে-

তার একমাত্র গন্তব্য হবে আদালত ও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো।

কোনও গোষ্ঠী বা ব্যক্তির সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতার প্রদর্শন করার সুযোগ নেই- এই বার্তা যত জোরালো হবে, তত দ্রুত সমাজে স্বাভাবিকতা ফিরবে।

২. সহিংসতার রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা নতুন 'গণঅভ্যুত্থান' এর দাবি তোলে:

এখানে গণঅভ্যুত্থান বলতে রাস্তায় নামা নয়-

বরং নাগরিকদের সামগ্রিক নৈতিক অবস্থান, সামাজিক প্রতিবাদ, আইনি প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি সম্মিলিত দাবি।

গণঅভ্যুত্থান মানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান।

রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনও গ্রুপ বা পক্ষকে নয়-

যে বা যারা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেই জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।

৩. আইনের বাইরে কোন প্রতিশোধ নয়- ন্যায়বিচারকেই চূড়ান্ত অস্ত্র হতে হবে

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শক্তি অস্ত্রের ঝনঝনিতে নয়, আইনের শাসনে। তাই-

◑ অপরাধীদের খুঁজে বের করা

◑ খোলামেলা তদন্ত

◑ স্বচ্ছ বিচার

◑ অপরাধীর পরিচয় নয়, অপরাধকে কেন্দ্র করে দণ্ড, এই নীতিগুলোই রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল রাখে।

৪. সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক যারা- তাদেরও বিচারের আওতায় আনা জরুরি

যে কোনও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক একা বেড়ে ওঠে না। অস্ত্র, অর্থ, নিরাপত্তা- সবকিছুই কোনও না কোনও শক্তি দিয়ে থাকে।

তাই অনুসন্ধান ও তদন্তে-

◑ পরিকল্পনাকারী

◑ অর্থায়নকারী

◑ নির্দেশদাতা

◑ সুরক্ষা দানকারী, এসবকেও আইনের আওতায় আনা অপরিহার্য।

৫. রাষ্ট্রের দায়িত্ব- নাগরিককে নিরাপদ রাখা

উসমান হাদীর ওপর হামলার মতো ঘটনা যদি বারবার ঘটতে থাকে, তবে নাগরিকরাই রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করবে।

এটি একটি দেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ।

রাষ্ট্রকে এখনই দেখাতে হবে-আইনের শাসন আছে, বিচার হবে, অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক- ছাড় পাবে না।

পরিশেষে বলবো, উসমান হাদীকে গুলিবিদ্ধ করা শুধু একটি অপরাধ নয়- এটি একটি সংকেত। সংকেতটি হলো, সন্ত্রাসী চক্র আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।

এখনই দৃঢ় রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ দাবির মাধ্যমে এই শক্তিগুলোকে প্রতিহত করা জরুরি।

কারণ- যে দেশে সন্ত্রাসীরা ভয় দেখায়, সে দেশে কেউ নিরাপদ নয়। আর যে দেশে আইন কথা বলে, সেখানে সন্ত্রাসের কোনও অস্তিত্ব থাকে না।

লেখক: এম এফ ইসলাম মিলন, ব্যবসায়ী ও কলামিস্ট।