হাওরের কৃষিতে নয়া স্বপ্ন

কিশোরগঞ্জে বেড়েছে ভুট্টা চাষ

Any Akter
এম.এ. কিবরিয়া, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৫৫ অপরাহ্ন, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ৮:৪৬ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। ধান, গমের চেয়ে ভুট্টা আবাদে খরচ কম এবং লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে মনোযোগ দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাওর উপজেলা মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, বাজিতপুরের মাঠে-মাঠে ভুট্টার আবাদ গতবছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে৷ ভুট্টা চাষে খরচ কম৷ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। ভুট্টা থেকে মাছ ও মুরগির খাদ্য উৎপাদন এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় এটি লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।

আরও পড়ুন: আগাম সবজি চাষে চরাঞ্চলে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

মিঠামইনের গোপদিঘী ইউনিয়নের কৃষক হাসেন আলী জানান, “অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি গত বছর ভুট্টা চাষ করেছিলাম। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর ভুট্টার চাষ বাড়িয়েছি। যদি ভুট্টার দাম ঠিক থাকে তাহলে এ বছরেও বেশ লাভ হবে।”

নিকলী হাওরের চাষি শরাফত আলী বলেন, ভুট্টা বিক্রি করা, কাঁচা পাতা গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো এবং গাছ শুকিয়ে লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ভূট্টা চাষের খরচ খুবই সীমিত ও সহজ। রোগ বালাই এর ঝুঁকি খুব কম।

আরও পড়ুন: জীবননগরে আমন ও রবি মৌসুমে সারের তীব্র সংকট, বিপাকে কৃষক

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ ‘বাংলাবাজার পত্রিকা’কে জানান, এ বছর জেলার ১৩ উপজেলায় ১২ হাজার ২১০ হেক্টর চাষ করা হয়েছে। জেলায় এ বছর কিশোরগঞ্জ সদর ৬০০ হেক্টর, হোসেনপুর ৬০০ হেক্টর, পাকুন্দিয়া ৬৬৫ হেক্টর, কটিয়াদি ৪০৫ হেক্টর, করিমগঞ্জ ৩৫৫ হেক্টর, তাড়াইল ৬৩ হেক্টর, ইটনা ৭২৫ হেক্টর, মিঠামইন ২৮৮৮ হেক্টর, নিকলী ৩১১০ হেক্টর, অষ্টগ্রাম ৯৮০ হেক্টর, বাজিতপুর ২০১০ হেক্টর, কুলিয়ারচর ১৩৬ হেক্টর ও ভৈরব ৯৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, “আমরা বরাবরই কৃষকদের ভুট্টা চাষে প্রণোদনা দিয়ে আসছি। ভুট্টা চাষে লাভ বেশি, খরচ কম। তা ছাড়া জমি পড়ে থাকার চেয়ে আমরা কৃষকদের ভুট্টা চাষে আগ্রহী করছি। এতে তারাও অনেক বেশি লাভের মুখ দেখছেন। ভুট্টার ফলন ঘরে ওঠাতেও আমরা বিভিন্ন কাটার মেশিন তাদের বিনামূল্যে হস্তান্তর করেছি। আশাকরি এ বছরও অধিক ফলনের মুখ দেখবেন এখানকার ভুট্টা চাষিরা। এ জেলা কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সোনালি ফসল ভুট্টা।

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেয়া হয়েছে বিনা মূল্যে সার ও বীজ। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।