হিজবুত তাহরীরের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জবি শিক্ষার্থীর ৩ দিনের রিমান্ড

Any Akter
আরাফাত চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩:২০ অপরাহ্ন, ১০ মে ২০২৫ | আপডেট: ৮:৫৯ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১–২২ সেশনের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী।

আজ শুক্রবার (৯ই মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বাংলাবাজার পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বৃহস্পতিবার আদালতে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক মো. শাহিনুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

আরও পড়ুন: অবশেষে বদলি হলেও বাতিলের চেষ্টা মাউশির প্রভাবশালী এসিআর সালমার

গত ৭ই মে রাতে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকার একটি মেস থেকে পুলিশের পোশাকে তাকে আটক করা হয় বলে জানা যায়।  ঘটনার পরপরই পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশেপাশের থানায় খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। পরে আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ আরও কয়েকটি সূত্র থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়।

মামলার এজহার থেকে জানা যায়, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছর ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এবং সংগঠনটির পক্ষে প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।

আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ

পুলিশের কাউন্টার টেরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের রিমান্ড আবেদন সূত্রে জানা যায়, ‘Come Out for Save Gaza’ ও ‘Protest Rally’ নামের কর্মসূচির প্রচার চালান অভিযুক্ত মিজানুর, যা সহিংসতা উস্কে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (টেকনো) ও ল্যাপটপ (লেনোভো) জব্দ করে বলে জানিয়েছে, যেখানে উগ্রপন্থি ও রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্টের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, গ্রেপ্তার আসামি প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে হিজবুত তাহারীর সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকা মর্মে স্বীকারোক্তি দেন। আসামি মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, প্রথমে তার অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। পরে জানতে পারি, তাকে রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

অভিযুক্ত মিজানুরের বড় ভাই সাজু রহমান বলেন, ওকে সাত তারিখ রাত ১১টার দিকে নারিন্দার মেস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন দিন কোনো খোঁজ পাইনি। পরে জানতে পারি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা তার ন্যায়বিচার চাই।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈনু বলেন, মামলাটি আমি এখানে যোগদানের আগে হয়েছে। মামলাটি ধানমন্ডি থানায় নথিভুক্ত হলেও এর তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এ বিষয়ে তারা আমার থেকে ভালো বলতে পারবে।