ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যসমাপ্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে একাধিক অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) সমর্থিত প্যানেল। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে “প্রশ্নবিদ্ধ ও কারচুপিপূর্ণ” আখ্যায়িত করে অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার অনিয়মের বিষয়ে অবগত হওয়ার পরও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও পড়ুন: ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের মতবিনিময়
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ছিল না। ব্যালট পেপার জালিয়াতি, ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি, পোলিং এজেন্টদের প্রবেশে বাধা, অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার, ভোটগণনায় অস্পষ্টতা—এসব কারণে শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের উৎসব নষ্ট হয়েছে বলে দাবি ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীদের।
আরও পড়ুন: রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর, উত্তাল ক্যাম্পাস
অভিযোগে জানানো হয়, ভোটার উপস্থিত হবার আগেই নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট পূরণ ও তালিকায় স্বাক্ষর করার মতো জালিয়াতি হয়েছে। নীলক্ষেতের একটি ছাপাখানায় বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায় বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে এসব বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা আসেনি।
এছাড়া প্রার্থীদের জানানো হয়েছিল ৮টি কেন্দ্রে ভোট হবে, কিন্তু ভোটের দিন দেখা যায় মোট ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট একটি প্যানেল ছাড়া অন্যরা পর্যাপ্ত পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দিতে পারেনি। একই সঙ্গে পোলিং এজেন্টদের তালিকা ভোটের আগের রাতেই প্রকাশ করা হয় এবং অনেকের আইডি কার্ড সরবরাহ না করায় তারা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি।
ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, ব্যালট পেপারে ক্রমিক নম্বর না থাকায় কারচুপির সুযোগ তৈরি হয়। ছাপানো, বিতরণ, ব্যবহার ও ফেরতকৃত ব্যালটের হিসাব কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। ভোটের সময় ১১টার পর থেকে অধিকাংশ কেন্দ্রে মার্কার ফুরিয়ে যায়, ফলে ভোটাররা বলপেন ব্যবহার করতে বাধ্য হন। এতে অনেক ভোট ওএমআর মেশিনে গণনা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইডের কয়েকজন সদস্য নির্বাচনের দিন বহিরাগতদের প্রবেশে সহায়তা করেছেন। এমনকি কয়েকজন বহিরাগতকে শিক্ষার্থীরা হাতেনাতে ধরে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করে।
ভোট গণনার সময় পোলিং এজেন্টদের কার্যত নিষ্ক্রিয় রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা। তাদের দাবি, “গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ধারক সংগঠন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করা হলেও প্রশাসন তদন্তে কালক্ষেপণ করছে। এতে করে ২০২৫ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন “ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ” হয়ে যাবে বলে দাবি ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের।