বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া শাকিলা বেগমের ঠাঁই বৃদ্ধাশ্রমে

হাতে কাপড়ের ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বৃদ্ধা মা শাকিলা বেগমকে বাড়ি থেকে বাসে উঠিয়ে দিয়েছিলেন ছেলে ও ছেলের বউ। বাসে তুলে দেওয়ার সময় ছেলে বলেছিলেন, ‘তুমি আর কখনোই বাড়িতে আসার চেষ্টা করবে না।’
গভীর রাতে শাকিলা বেগমকে দিনাজপুরের হিলি শহরে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে অন্যের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নেন তিনি। পরে অসুস্থ হলে জায়গা হয় স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অবশেষে তার ঠাঁই হয়েছে ‘সাফল্যের গল্প শোনাব’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে।
আরও পড়ুন: মা–বাবার খোঁজ নেই, দুই যমজ বোনের ভরসা এখন অসহায় দাদি
রোববার (২৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায়ের উপস্থিতিতে একটি প্রতিনিধিদল শাকিলা বেগমকে রংপুর শহরের ওই বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে যায়।
ছেলে জামিল হোসেন ও ছেলের বউ বাড়িতে প্রায়ই মানসিক নির্যাতন করতেন অভিযোগ করে শাকিলা বলেছিলেন, কয়েক দিন আগে ছেলে ও ছেলের বউ একটি ব্যাগে পরনের কিছু কাপড়চোপড় ভরে তার হাতে দিয়ে শহর থেকে একটি বাসে তুলে দেন। বাসে তুলে দেওয়ার সময় ছেলে তাকে বলেন, ‘তুমি আর কখনোই বাড়িতে আসার চেষ্টা করবে না। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে চলে যাও।’
আরও পড়ুন: এক হাতেই টেনে চলছেন সংসারের ঘানি!
ইউএনও অমিত রায় বলেন, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার কথা জানতে পারেন। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকেও জানান। পরে জেলা প্রশাসক ও হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পরামর্শে ওই বৃদ্ধার দেখভালের জন্য তার পরিবারের কাউকে না পাওয়া পর্যন্ত সরকারের নিবন্ধিত বৃদ্ধাশ্রমে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শাকিলা বেগমকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর রেজা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দাস, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও থানার ওসি আবু সায়েম মিয়া প্রমুখ।