২ উপদেষ্টা কে স্মারকলিপি দিয়ে কর্মচারীঐক্য ফোরাম নেতৃবৃন্দ
চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হলে ঈদের পর অকল্পনীয় কর্মসূচি

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। তারা বলেছেন, দাবি মানা না হলে ‘এমন কর্মসূচি দেবো কল্পনাও করতে পারবেন না।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কথা আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের। এর আগে আন্দোলনকারী কর্মচারীরা সচিবালয়ের বাদামতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এই সমাবেশে আন্দোলনকারী কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আহত ও অসুস্থদের চিকিৎসা সহায়তা দিলেন তারেক রহমান
নুরুল ইসলাম বলেন, ঈদ সামনে তাই আগামীকাল কর্মসূচি রাখিনি। যদি এই আইন বাতিল না করা হয়, তাহলে প্রয়োজনে শুধু কর্মবিরতি নয়, অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। দরকার হলে সারা দেশে ডিসি অফিস, বিভাগীয়সহ সমগ্র বাংলাদেশে এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেব। ১৫ জুনের মধ্যে ভালো সংবাদ না পেলে নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, ‘আগামীকাল (৪ মে) যেহেতু ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস, তাই আমাদের কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আগামী ১৬ জুন আপনারা সবাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। ওই দিন বেলা ১১টায় কেউ যাতে কর্মস্থলে না থাকেন। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে সমস্বরে বলবো- অবৈধ কালো আইন, মানি না মানবো না।’
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরে যাত্রীর সঙ্গে প্রবেশে সীমা, গাড়ি থামার সময় নির্ধারণ করল বেবিচক
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা মনে কইরেন না কর্মচারীরা বোকা। আপনাদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটা আর পূরণ হলো না। আপনারা চাচ্ছেন আপনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ। ইনশাআল্লাহ যদি বেঁচে থাকি ঈদের পরে সংঘর্ষ দিয়েও যদি হয় তারপরও কালো আইন বাতিল করবো।’
ঐক্য ফোরামের কো মহাসচিব নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন নেতা সমাবেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের পর কর্মচারীরা বিক্ষোভ করে মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে অবস্থান নেন। সেখান থেকে প্রথমে আইন উপদেষ্টা ও পরে অর্থ উপদেষ্টার বরাবর স্মারক লিপি দেওয়ার কথা।
অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে গত দুই দিনে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দেন কর্মচারীরা। এই পাঁচজন উপদেষ্টা হলেন খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।