এক কমিশনারসহ এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ন, ০৩ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১:২৫ পূর্বাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কমিশনারসহ আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে দুদক। 

তারা হলেন- ঢাকা পূর্বের কমিশনার (কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট) কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল স্থলবন্দরের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, উপ-কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আয়কর গোয়েন্দা ইউনিট) সেহেলা সিদ্দিকা ও কর অঞ্চল-২ এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

গত মাসে এনবিআরে সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আন্দোলন হয়। এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে হওয়া আন্দোলনে এই পাঁচজনের অংশগ্রহণ ছিল। সেহেলা সিদ্দিকা আন্দোলনের সময় ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র ছিলেন।

দুদক জানায়, কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন বলেও জানা যায়।

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

এর আগে একই অভিযোগে গতকাল আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুতফুল আজীম, সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাছান। এদের মধ্যে শিহাবুল ইসলাম, মো. তারেক হাছান, আব্দুল রশীদ মিয়া এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য।

গত ২৯ জুন এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানায় দুদক। যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য।

২৯ জুন যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু। এর মধ্যে পাঁচজনই এনবিআরের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন।

রাজস্ব ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছিল এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। দুদিন মার্চ টু এনবিআর ও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন তারা। গত ১২ মে মধ্যরাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর বিরুদ্ধে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মসূচির ফলে সরকার গত ২৫ মে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে এনবিআর বিলুপ্ত না করে বরং এটিকে সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় আরও শক্তিশালী করা, রাজস্ব নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে আলাদা একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠন করা এবং প্রয়োজনীয় সব সংশোধনের আগ পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশ কার্যকর করা হবে না বলে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ জুন ঐক্য পরিষদ তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।