এনবিআরের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত দুদকের

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:০২ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, ২০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদক মহাপরিচালক জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর ১৭ নং বিধির আলোকে ওই ১৭ কর্মকর্তাকে তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিল করার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ, আশ্রয় দিচ্ছে ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে

যে ১৭ কর্মকর্তার হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন— কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৩) এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর অ্যাকাডেমির যুগ্ম-কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল ১৬-এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম ও সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।

গত জুলাই মাসে দুদক এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে সহায়তা করেছেন। এর ফলে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

আরও পড়ুন: সেনানিবাসের বাড়ি সাবজেল ঘোষণা প্রসঙ্গে ঢিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ঘুষ না পেলে মিথ্যা মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করেন। এছাড়া, করদাতাদের অতিরিক্ত কর ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রেও তারা ঘুষ দাবি করেন, যা ফেরতযোগ্য অর্থের প্রায় অর্ধেক।

অভিযোগ অনুযায়ী, এই কর্মকর্তারা তাদের চাকরিকালীন সময়ে শুল্ক, ভ্যাট এবং আয়কর ফাঁকির সুযোগ দিয়ে অবৈধভাবে প্রচুর সম্পদ অর্জন করেছেন, যা তাদের বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

উল্লেখ্য, এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ করার সরকারি অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন করেন। আন্দোলনের পর থেকে সরকার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। একই সঙ্গে, দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলনে অংশ না নেওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।