‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যা শিক্ষার্থীদের অপমানিত করেছিল: নাহিদ ট্রাইব্যুনালে

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ন, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:০৫ অপরাহ্ন, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দিতে বলেছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যা দেওয়ার কারণে সারা দেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন।

তিনি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলন ও সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে আংশিক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার অপর দুই আসামি ছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: টয়লেট পরিচালনা প্রশিক্ষণে বিদেশ যাচ্ছেন ৩ কর্মকর্তা

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘১৪ জুলাই শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যা দেন এবং কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। এ ধরনের বক্তব্য সরকারের দমন-পীড়নের কার্যক্রমকে বৈধতা দেয়, যার মাধ্যমে আন্দোলনের ন্যায্যতা খাটো করার চেষ্টা করা হয়।’’

তিনি জানান, ওই মন্তব্যের পরই সারা দেশের শিক্ষার্থীরা রাতেই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে অংশ নেন।

আরও পড়ুন: ৩৯ পরিদর্শককে সহকারী পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি

নাহিদ আরও জানান, ১৭ জুলাই গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই আন্দোলন প্রত্যাহার এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। একই সময়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানাসহ বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

তিনি বলেন, ‘‘১৭ জুলাই রাতে দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ১৮ জুলাই সারা দেশের শিক্ষার্থীরা রাজপথে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্ররাও এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।’’

নাহিদ ইসলামের দাবি, আন্দোলনের নেতাদের জীবনের ওপর হুমকি তৈরি হয়, তারা আত্মগোপনে চলে যান এবং পুলিশের গুলিতে অনেক শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন। একই সময়ে সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে আন্দোলনের খবর লোপ পায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ নাহিদ ইসলামের আংশিক জবানবন্দি আজ গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার জবানবন্দির অবশিষ্ট অংশ রেকর্ড করা হবে।