হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে।
দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় সোমবার (২৭ অক্টোবর) এসব মামলা দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে পাল্টা তলব
দুদক সূত্র জানায়, গত জানুয়ারিতে নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। সে সময় তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হলেও নির্ধারিত সময়ে তারা বিবরণী জমা দেননি। ফলে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এসব হিসাবে মোট জমা হয়েছে প্রায় ৩৮৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে প্রায় ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বদল নয় ডিএমপি’তে সক্ষমতা তৈরির উদ্যোগ
নাঈমুল ইসলাম খানের নামে থাকা ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা হয়েছিল, যার মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে থাকা ১৩টি হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছিল আরও ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তাদের পরিবারের ব্যবহারে রয়েছে ১২টি ক্রেডিট কার্ড, যার সম্মিলিত সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা।
২০২৪ সালের ৬ জুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান নাঈমুল ইসলাম খান। তবে ওই বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর তিনি তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২৫ আগস্ট দুদক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে, তবে এর আগেই তিনি বেশিরভাগ অর্থ তুলে নেন।





