স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দুই সাবেক কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের নোটিশ

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ন, ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৬:৩১ অপরাহ্ন, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী ও মাহমুদুল হাসানের নামে থাকা সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি পাঠানো এ নোটিশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব পালনকালে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জন, প্রভাব খাটানো ও অনিয়মের অভিযোগে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পদের উৎস ও বিস্তারিত বিবরণ দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: আমজনতার পার্টির নিবন্ধনের জন্য তারেককে আপিল করার পরামর্শ ইসি সচিবের

দুদক সূত্র আরও জানিয়েছে, এর আগে তুহিন ফারাবী ও মাহমুদুল হাসানকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে সময় তাদের কাছ থেকে আয়-ব্যয়ের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

ওই তথ্য যাচাইয়ের পরই সম্পদের বিস্তারিত হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন আসিফ, পদত্যাগের সময় পরে জানাবেন

দুদক জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হিসাব না দিলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য খাতে চলমান দুর্নীতি ও অনিয়মের কয়েকটি অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের সময় কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য ও সরবরাহ কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই দুদক তুহিন ফারাবী ও মাহমুদুল হাসানের সম্পদ যাচাই প্রক্রিয়া শুরু করে।

এর আগে গত ২১ মে দুদক তুহিন ফারাবী, ডা. মাহমুদুল হাসান ও এনসিপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দীন তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে তদবির, চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শাখার কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করেন। সে সময় দুদক তাদের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করে এবং সম্পদের উৎস জানতে চায়।

তুহিন ফারাবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দপ্তরে কাজ করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার ও তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে নামে-বেনামে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলেন।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিজের, স্ত্রী ও সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, আয়কর নথি ও ব্যাংক হিসাবের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়।

একইভাবে, ডা. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তাকেও নিজের ও পরিবারের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, আয়কর রিটার্ন এবং ব্যাংক বিবরণীসহ হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এরপর গত ২৭ মে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব তাদের দু’জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লক করার নির্দেশ দেন আদালত।

দুদক জানিয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তিকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।