নিক্সন-শাজাহান খানের লোকদের অর্থায়ন করছে শাহাবুদ্দিন

হাসিনার রায় ঘিরে পদ্মাসেতু এক্সপ্রেসওয়েতে নাশকতার পরিকল্পনা

Any Akter
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ন, ১৫ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:৪৯ অপরাহ্ন, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিনে পদ্মাসেতু মহাসড়কে নাশকতার পরিকল্পনা করছে দুর্বৃত্তরা। এক্সপ্রেসওয়ে মহাসড়ক ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ বিডিআর আনসার সহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কারাগারে আটক সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ও পলাতক এমপি নিক্সন চৌধুরি সমর্থকদের বিদেশে বসে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মালিক শাহাবুদ্দিন অর্থ সহায়তা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

কারাগারে আটক শাজাহান খান ও বিদেশে পলাতক সাবেক এমপি সমর্থকরা ব্যাপক প্রস্তুতির খবরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পাল্টা প্রস্তুতি নেয়।  পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও আর্মড  পুলিশ ব্যাটালিয়ান টহল করছে। গত ১৩ নভেম্বর কথিত লকডাউনে কয়েক হাজার লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় অবরোধ গড়ে তোলে। কয়েকটি বাসে আগুন দে। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে অবশ্য তাদের তাড়িয়ে দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মালিক বিদেশে পলাতক শাহাবুদ্দিনের বাড়ি মাদারীপুর।  ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করে সরকার পতনে নাশকতার জন্য গোপন সংগঠিত করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: সিও ক্লোজড, বাবুর্চি সুইপারসহ কক্সবাজার র‌্যাবে গণবদলি

এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গা চত্বরের পাশে তিনতানার মোড়। মাদারীপুর ফরিদপুর ও শরীয়তপুর জেলার সংযোগস্থল হওয়ায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত টহল ছিল না। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরেও নাশকতা ঠেকাতে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফরিদপুরের এসপির বিরুদ্ধে গুরুতর ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক ট্রাইব্যুনালে হাসিনার রায় ঘিরে পদ্মা সেতু মহাসড়কের নাশকতার পরিকল্পনার বিষয় এটি স্বীকার করে বলেন পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। নাশকতায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে শাহাবুদ্দিনের অর্থায়নের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান।  এদিকে পদ্মাসেতু হাইওয়ে দীর্ঘ এলাকায় কোন বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। পেট্রোল বোমা ভর্তি একটি লাগেজ উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়িতে আগুন বোমাবাজির ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

তিন থানা এলাকায় দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিধান চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায় নাশকতার পরিকল্পনাকারীদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দিলেও তিন থানা পুলিশের সমন্বয়হীনতার জন্য ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলকে দায়ী করা হয়েছে। পদ্মা সেতু এলাকায় ন কোন প্রকার নাশকতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুন্সিগঞ্জ এলাকায় শনিবার মত বিনয় করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম দেখে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন। এদিকে পরিবহন সেক্টরে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্য নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধে। সাজান কাল জেলা থাকলেও তার নিয়মিত যোগাযোগ এনায়েতুল্লাহ ওসমান আলীর সাথে। এনায়েতুল্লাহ সপরিবারে পালিয়ে গেলেও ওসমান আলী আত্মগোপনে থেকে পরিবহনে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরীর কাজ করছে।

আরও পড়ুন: আমিরাতে বন্দি বাকি ২৪ বাংলাদেশি অচিরেই মুক্তি পাচ্ছেন

কারাগারে আটক সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আত্মীয় ডাচ বাংলা ব্যাংকের মালিক শাহাবুদ্দিন জুলাই কোন অভ্যুত্থানের সময় প্রায় প্রতিদিনই আইন মন্ত্রীর বনানীর বাসায় অবস্থান করে আন্দোলন দমনে সক্রিয় ছিলেন। আনিসুল হকের অবৈধ উপার্জিত বিপুল সম্পদ ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে কানাডায় প্রচার করেন। তারই তত্ত্বাবধানে অবৈধ উপার্জিত অর্থে গড়ে তোলে সিটিজেন ব্যাংক।  চেয়ারম্যান করা হয় আনিসুল হকের বান্ধবী আলোচিত নারী তৌফিকা করিম।

গণঅভ্যুত্থানের পর সালমান রহমান ও আনিসুল হক পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়লেও পরবর্তীতে গোপনে কানাডায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন শাহাবুদ্দিন ও তৌফিকা করিম। ডাচ বাংলা ব্যাংকের রকেট লেনদেন ও সামাজিক সহায়তার কর্মসূচিকে পুঁজি করে সরকার বিরোধী আন্দোলনে সংগঠিত করছে বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী দোসর মুক্ত ব্যাংকিং সেক্টরে সংস্কার করা হলে ডাস বাংলা ব্যাংক এখনো শাবুদ্দিন পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। ২০১৬ সালের পর থেকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বর্তমান এমডি আবুল কাশেম মোঃশিরিন হক। এর আগে  প্রায় আট বছর তিনি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। শাহাবুদ্দিন পরিবারের বিশ্বস্ত ওই ব্যক্তি এখন ব্যাংকের সর্বময় নিয়ন্ত্রক। তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের এটিএম বুথ,ও সিআরএম আমদানিতে ২০০ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।