১৫ মাসে অভূতপূর্ব অর্জন:

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ’ বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২:০৪ অপরাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মাত্র ১৫ মাসে এমন সব কাজ করেছে, যা অতীতে কোনো সরকার করতে পারেনিএমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নিজের ফেসবুকে দেওয়া ‘অন্তর্বর্তী সরকার: নামেই শুধু সরকার, আসলে এক প্রকার এনজিও-গ্রাম’ শীর্ষক স্ট্যাটাসে তিনি এসব দাবি তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: লাভেলো আইসক্রিমের এমডি-চেয়ারম্যানসহ চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, অনেকের কাছে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্বল প্রশাসন হিসেবে বিবেচিত হলেও বাস্তবে সরকারটি গুরুত্বপূর্ণ সব অগ্রগতি অর্জন করেছে। তার ভাষায়, “এতটাই দুর্বল যে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত এর সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করতে আগ্রহী হয়নিএমন কথা বলা হলেও সরকারের কর্মকাণ্ড বলছে অন্য কথা।”

আরও পড়ুন: যারা ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয় : সালাম আজাদ

তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকারকে বারবার অক্রিয়তা, অযোগ্যতা ও নিষ্ক্রিয়তার তকমা দেওয়া হয়েছে। অনেকে একে ব্যঙ্গ করে ‘কিছু না করা, মাখন-খাওয়া দল’ও বলেছেন। কিন্তু শফিকুল আলম মনে করেনএই সরকার তাদের প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জন করেছে।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন অর্জনের তালিকা তুলে ধরেন

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জনগুলো

শান্তি ও স্থিতিশীলতা:

বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।

মার্কিন শুল্কচুক্তিতে অগ্রগতি:

কোনো লবিং ফার্ম ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কবিষয়ক আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে

রেকর্ড আইন প্রণয়ন:

১৫ মাসে রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে, শ্রম আইন সংস্কারও এর মধ্যে।

ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম:

জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করেছে।

বিচার বিভাগ শক্তিশালীকরণ:

সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মামলা ও জামিন প্রভাবিত করা কঠিন হবে।

বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি:

ইউরোপের শীর্ষ বন্দর প্রতিষ্ঠান লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগে সম্মত হয়েছেযা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ।

পররাষ্ট্রনীতির নতুন কাঠামো:

নতুন নীতি বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা:

অর্থনীতি আবার উন্নয়নমুখী; ব্যাংক লুটপাট কমেছে, টাকা স্থিতিশীল হয়েছে, খাদ্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমেছে।

জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা:

অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে; এমনকি শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

গুম ও রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান:

জোরপূর্বক গুম বন্ধ হয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতানির্ভর কর্মকাণ্ড নিষ্ক্রিয় হয়েছে।

সংস্কৃতির জাগরণ:

নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জনমত তৈরি করেছেযাকে তিনি ‘ফারুকী ইফেক্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

নিরাপত্তা সংস্থার সংস্কার:

র‍্যাব আইন মেনে কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হয়রানি কমেছে এবং ১৬ মাসে কোনো সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ ওঠেনি।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা:

সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে।

স্ট্যাটাসের শেষে প্রেস সচিব লেখেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এত অল্প সময়ে কোনো সরকার এত কিছু অর্জন করতে পারেনি, যতটা অন্তর্বর্তী সরকার (IG) এই ১৫ মাসে করেছে।”