ওয়ারীতে জমি বিক্রি করে আবার দখলে নেওয়ার অভিযোগ

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ন, ২৪ অগাস্ট ২০২৪ | আপডেট: ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর ওয়ারীতে একটি জমি বিক্রি করেও পরবর্তীতে তা দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এতে বিনিয়োগ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে আবাসন খাতের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান আল মুসলিম বিল্ডার্স।

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কোম্পানির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনসারুজ্জামান, অ্যাডভোকেট সাজিরুল হাসান এবং প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার এমএ কাইয়ুম।

আরও পড়ুন: ফখরুলের আসন দাবির মন্তব্যের প্রমাণ চাইল জামায়াত

লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী আনসারুজ্জামান বলেন, ২০১১ সালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার ১নং নবাব স্ট্রিটে ৯২.০৫ শতাংশ জমি কেনার জন্য কোম্পানিটি আইনজীবী সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে বায়না চুক্তি সম্পাদন করে। ওই সময় আজহারুল কবীর নিজেকে সম্পূর্ণ জমির মালিক দাবি করে তাদের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে কাগজপত্র তল্লাশি করে আরও দুইজন মালিকের নাম বেরিয়ে আসে। এরপর আজহারুল কবীর নিজেদের ভেতর আপস-মীমাংসা করে সম্পূর্ণ জমি কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে দ্বিতীয় দফায় চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই সময় তিনি জাল কাগজপত্র সৃজন করে কোম্পানিকে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় কোম্পানি মূল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে ওই জমি কিনে নেয়। ওই জমিতে আজহারুল কবীরের মাত্র ৬.১৩ শতাংশ জমি রয়েছে। 

‘এ নিয়ে মামলা আদালতে গড়ালে আদালতের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের ১২ মে সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে পুনরায় একটি আপস চুক্তি সম্পন্ন হয়। যার ফলে তিনি জমির মালিকানার সমস্ত দাবি ত্যাগ করেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আরও ১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকাসহ সর্বমোট ২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়, বর্তমানে তার ওই সম্পত্তির ওপর কোনো অধিকার নেই। তিনি সেখান থেকে বাসা স্থানান্তর করার জন্য কোম্পানির কাছ থেকে তিন মাস সময় নেন।’ 

আরও পড়ুন: বিএনপির কাছে কত আসন চেয়েছে জামায়াত, জানালেন মির্জা ফখরুল

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ৭ আগস্ট  সৈয়দ আজাহারুল কবীর ও তার ছেলে ইজাজ কবীর এবং তাদের সহযোগীরা ওই জমিতে অনুপ্রবেশ করে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও আল-মুসলিম গ্রুপের কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে কোম্পানির সম্পত্তি দখল করে নেয় এবং কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় এক কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে। তাছাড়া গত ২০ আগস্ট প্রতারক আজহারুল কবীর ওই জমি নিজের দাবি করে প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আল মুসলিম বিল্ডার্স এবং আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করেছে সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চালায়।’ 

এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের সঙ্গে এসব ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই জানিয়ে আল মুসলিম বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন থেকে বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদানে ওই প্রতারকের কবল থেকে জমিটি উদ্ধার করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। 

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজহারুল কবীরের মোবাইল ফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।