রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থেকে সাংবাদিকদের বেরিয়ে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
সাংবাদিকদের প্রতি রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি পরিহারের আহ্বান জানিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাদারিত্ব রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর দ্বি-বার্ষিকী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করলে সমস্যার সমাধান হয় না। সাংবাদিকদের প্রকৃত কাজ হলো তাদের নিজস্ব দাবি-দাওয়া নিয়ে মালিকপক্ষ বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা এবং পেশাদার সাংবাদিকতা বজায় রাখা। সেটাই ইউনিয়নের মূল ভূমিকা।”
আরও পড়ুন: যারা ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয় : সালাম আজাদ
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে গণমাধ্যমের ওপর ‘মারাত্মক চাপ’ সৃষ্টি করা হয়েছে। “ফ্যাসিবাদী শাসন, অর্থাৎ শেখ হাসিনা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমের জায়গাটা ধ্বংস করে দিয়েছেন,” দাবি করেন তিনি।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য জাতি উন্মুখ হয়ে আছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার এই সুযোগ আমরা সবাই চাই।”
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা নয়, আসাদুজ্জামান খান কামালকে দিয়েই শুরু হবে প্রত্যর্পণ
তিনি বলেন, ভিন্নমতই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। “আমি আপনার সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, কিন্তু আপনার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করাই প্রকৃত গণতন্ত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে ভিন্নমত দেখলেই তাকে শত্রু মনে করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়—এটি বন্ধ হওয়া উচিত।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংযত তথ্য পরিবেশনকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “আজকের সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সেখানে কোনো দায়বদ্ধতা নেই—যা খুশি তাই বলা যায়। রাজনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সকলের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চলছে, যা গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে।”
তিনি আরও বলেন, “এভাবে মিথ্যা প্রচারণা ও মব ভায়োলেন্স তৈরি করে দেশে এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
বক্তব্যের শেষ অংশে তিনি বলেন, “সবাই জানেন, বিএনপি একটি প্রমাণিত রাজনৈতিক দল, যার জন্ম ১৯৭৫ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। দলটি সর্বদা দেশের গণতন্ত্র, স্বাধিকার ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করেছে।”
এদিনের সম্মেলনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সারাদেশের ১৮টি অঙ্গ ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিকালে অনুষ্ঠিত হবে কর্ম অধিবেশন, যেখানে সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে।





