লঙ্কানদের উড়িয়ে সিরিজে ফিরলো বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি সিরিজরের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হার দিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে কিভাবে প্রতিশোধ নিতে হয় তা দ্বিতীয় ম্যাচেই দেখিয়ে দিলো বাংলাদেশ। ডাম্বুলায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে স্বাগতিকদের ৮৩ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে বাংলাদেশ। ১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শরিফুল ইসলামের তোপের মুখে পড়ে শ্রীলংকা। সফরজুড়ে বাংলাদেশকে ভোগানো কুসল মেন্ডিস রানআউট হলেও তিনে নামা কুশল পেরেরাকে ফেরান শরিফুল। দলীয় তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে পেরেরাকে ফেরানোর পর পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে আবারও শরিফুলের আঘাত। এবার শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন আবিষ্কা ফার্নান্দোকে। এদিন সেট হতে পারেননি লংকান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাও। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ৫ রান করেই বাংলাদেশ অধিনায়কের কাছে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ৩০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলংকা।
আরেক পাশে একের পর এক উইকেট পরলেও অবিচল ছিলেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। পঞ্চম উইকেটে দাসুন শানাকাকে নিয়ে গড়েন ৪১ রানের জুটি। তবে লংকানদের প্রতিরোধের চেষ্টা ওই পর্যন্তই শেষ। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাদের ইনিংস। শেষদিকে তাদেরকে বিধ্বস্ত করেন মূলত রিশাদ হোসেন। নিশাঙ্কা (৩২), চামিকা করুনারত্নে ও বিনুরা ফার্নান্দোকে ফেরান তিনি। নিশাঙ্কার ইনিংসই হয়ে থাকে লংকানদের সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: আইএল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার দল পেলেন মোস্তাফিজ
ইনিংসের ৩৪ বল বাকি থাকতেই ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। লংকানদের হয়ে দুই অঙ্কের রান নিশাঙ্কা ছাড়া কেবল শানাকাই স্পর্শ করতে পারেন। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন প্রথম টি-টোয়েন্টিতে না থাকা শরিফুল ও রিশাদ। দুইটি উইকেট পেসার সাইফউদ্দিনের। একটি করে উইকেট ভাগ করে নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান তামিমকে। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৬৯ রান যোগ করেন অধিনায়ক লিটন। যদিও রান তোলার গতি আশাব্যঞ্জক ছিল না।
আরও পড়ুন: দোহায় বসুন্ধরা কিংসের হয়ে সম্ভাব্য অভিষেক কিউবা মিচেলের
দলীয় ৭৬ রানে বিদায় নেন এক শ’র ওপরের স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা হৃদয়। ২৫বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করে আউট হন তিনি। দলের সঙ্গে আর ২ রান যোগ হতে ফেরেন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও। তবে বাংলাদেশের রানের গতি বদলে যায় ছয় নম্বরে শামীম নামার পর।
লিটনের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৩৯ বলে ৭৭ রান যোগ করেন শামীম। এরই মধ্যে ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন। দীর্ঘ ১৩ ইনিংস পর পঞ্চাশের দেখা পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম ফিফটি। সবমিলিয়ে এই সংস্করণে লিটনের ১২তম ফিফটি এটি।
১৯তম ওভারের প্রথম বলে মহেশ থিকসানার বলে ফেরেন লিটন। ততক্ষণে ৫০ বল খেলে করেন ৭৬ রান। নান্দনিক এই ইনিংসে ১টি চারের সঙ্গে তিনি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৫টি। শেষ ওভারে দেখা যায় নাটক। শামীম ছক্কা হাঁকালেও রান আউট হয়ে ফিফটি মিস করেন। ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংস ৫টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা হাঁকান তিনি। তার আগের বলেই রান আউট হন জাকের আলি। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানে থামে টাইগাররা।
শ্রীলংকার সবচেয়ে সফল বোলার বিনুরা ফার্নান্দো। ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন তিনি। একটি করে উইকেট শিকার করেন নুয়ান থুসারা ও থিকসানা। জেফরি ভ্যান্ডারসে ও দাসুন শানাকার বলে সবচেয়ে বেশি গতিতে আজ ব্যাট করেছে বাংলাদেশ।