পাটলাই বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ফ্যাসিস্ট রতন বাহিনীর বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ

Sanchoy Biswas
মো. আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ন, ০৫ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১১:১৯ অপরাহ্ন, ০৯ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার উত্তর-শ্রীপুর ইউনিয়নের কামালপুর নামকস্থানে বিআইডব্লিউটি এ কর্তৃক পাটলাই নদীতে দুইবছরের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় থেকে  তিন কোটি পচাত্তর লক্ষ টাকায় ইজারা গ্রহন করেন ফারুক এন্ড ব্রাদার্স।

ইজারাদারের পক্ষে ঘাটের ম্যানেজার আল আমিন,সিজিল মিয়া, কয়লা ও পাথর পরিবহনকারী প্রতিটি ভলগেট নৌকা হতে সরকার নির্ধারিত ৩৪.৫০ পয়সা হারে টোল আদায় করছেন। 

আরও পড়ুন: ভোলায় শুল্ক ফাঁকি দেওয়া অবৈধ সিগারেটসহ আটক ৩

কিন্ত ২০২৪ সালের ৫ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পরও ফ্যাসিস্ট নেতা বিআইডব্লিউটিএ এবং যাদুকাটা নদীর সাবেক ইজারাদার রতন বাহিনীর লোকজন বিআইডব্লিউটিআইএ ঘাট, শ্রীপুর নৌকা ঘাট, ডাম্পের বাজার নৌকা ঘাটে নৌযান থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।

এবছর রতন মিয়া সিন্ডিকেট  বিআইডব্লিউটিএ ও যাদুকাটা বালু মহাল সরকার থেকে ইজারা না পাওয়ায় নতুন ইজারাদার আল-ফারুক এর শেয়ার পার্টনার উত্তর-শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা দিলোয়ার হোসেন তালুকদার, জিয়াউর রহমান আখঞ্জী, ইসলাম হোসেন আখঞ্জী ও কবির হোসেন এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন রতন বাহিনীর জেনারেল ম্যানেজার লোকমান হোসেন, অনিক মিয়া গংরা। 

আরও পড়ুন: ভারতীয় চোরাচালান ধরতে গিয়ে নৌকা ডুবে বিজিবি সদস্য নিখোঁজ

সাবেক ইজারাদার রতন মিয়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬ আনার  শেয়ার ছিল দিলোয়ার হোসেন তালুকদার গংদের। এভাবে চলতে থাকে ঘাটে টোল আদায়ের কার্যক্রম। কিন্ত গত ২৮ জুন দিলোয়ার হোসেন তালুকদার, জিয়াউর রহমান আখঞ্জী, ইসলাম হোসেন আখঞ্জী ও কবির হোসেন গত ২৬ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত তিনদিনের টোল আদায়ের কালেকশনের তিনলাখ ৫১ হাজার ৬০০ শত টাকা জমা রাখেন। রতন মিয়ার সাথে চুড়ান্ত হিসেবের পর ঐ টাকা বন্টন হবে।

মেসার্স সোহাগ এন্টাইপ্রাইজের মেয়াদ ১ জুলাই শেষ হওয়ার পর রতনের নিয়োগকৃত ম্যানেজার লোকমান হোসেন ও সহকারী ম্যানেজার অনিক মিয়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের দখল ছেড়ে যাওয়ার পর পরেই নতুন ইজারাদার মেসার্স ফারুক এন্ড ব্রাদার্স এর লোকজন  কালেকশন করছেন।

আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ফ্যাসিস্ট নেতা রতন মিয়া যাদুকাটা,মাহরাম,পাটলাই, রক্তি নদী,আবুয়া নদী, শ্রীপুর নৌকা ঘাট, ডাম্পের বাজার নৌকা ঘাট  প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে গত 

দুই বছর যাবৎ ভোগ করেছেন। এখন আবার বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে নদীতে তার লোকজন বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। ফারুক এন্ড ব্রাদার্স এর নিয়োগকৃত লোকজন 

কয়লা ও চুনাপাথর সহ বিভিন্ন পণ্যবাহী নৌকা থেকে  পরিবহনতকৃত ছোটবড় প্রতি ভলগেট নৌকা থেকে যেখানে ৩৪.৫০ পয়সা হারে টোল আদায় করছে। কিন্তু সেখানে মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের লোকজন বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে প্রতিটি ভলগেট নৌকা থেকে প্রতিটনে প্রায় দিগুন ৫০.৫০ পয়সা হারে চাদাঁ আদায় করেছিলেন। 

এ বিষয়ে উত্তর-শ্রীপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও  বিএনপি নেতা দিলোয়ার হোসেন তালুকদার, সাবেক ভাইচ চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম আখঞ্জি, ইমলাক হোসেন, জিয়াউর রহমান,কবির হোসেন জানান, বিগত দুই বছর ধরে রতন মিয়া যাদুকাটা (১) যাদুকাটা (২) এবং আবুয়া, রক্তি, পাটলাই, দূর্লভপুর, সুরমা বিআইডব্লিউটিএ ক্ষমতার দাপটে সিন্ডিকেট দ্বারা ভোগ করে গেছেন। এবছর তিনি  ইজারা না পেয়ে বর্তমান সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারাদার ফারুক এন্ড ব্রাদার্সের নিয়োগকৃত লোকজনদেরকে কালেকশন করতে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি সহ স্থানে স্থানে তার লোকজন দিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হব। উনি আমাদের ৬ আনা শেয়ারের টাকা আত্মসাৎ করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

এ ব্যাপারে ফ্যাসিস্ট নেতা মো. রতন মিয়া জানান,বিএনপি নামধারী কিছু সংখ্যক লোকজন কালেকশনের টাকা আত্মসাৎ করে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে আমার লোকজনকে তাড়িয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ'র সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলের উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে মেসার্স ফারুক এন্ড ব্রাদার্সের লোকজন ঘাটে কালেকশন করছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নিবাহী অফিসার মো আবুল হাসেম জানান, মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের মেয়াদ শেষ  হওয়ার পর নতুন ইজারাদার ঘাটের দখলে আছেন।