লালমনিরহাট মুক্ত দিবস: ৬ ডিসেম্বরের গৌরব ও আয়োজনহীনতার আক্ষেপ
আজ ৬ ডিসেম্বর, লালমনিরহাট মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয় জেলার জনপদ। দীর্ঘ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও দিনটি এখনও বাঙালির গর্ব, স্বাধীনতার উত্তাল মুহূর্তের স্মৃতি এবং শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের দিন। কিন্তু কৌতূহল ও আবেগ থাকলেও এ বছর সরকারি বা বড় কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন চোখে পড়ছে না—এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন ও আক্ষেপ দুটিই আছে।
মুক্তির স্মৃতিতে আবেগঘন সকাল
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে টানা তিন দিন ১০ ডিগ্রি, শীতের তীব্রতা বেড়েছে
শহরের বিভিন্ন স্থানে সকালে স্বাধীনতার গান, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে স্বতঃস্ফূর্ত ফুল দেওয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ছোটখাটো সমাবেশ—সব মিলিয়ে দিনটি শুরু হয়েছে এক ধরনের আবেগঘন পরিবেশে। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এসেছে শিশুদের, মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতে। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্ত দিবসের ইতিহাস তুলে ধরছেন।
কিন্তু বড় আয়োজন কোথায়?
আরও পড়ুন: নগরকান্দায় পবিত্র কাবা শরিফ অবমাননার প্রতিবাদে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
স্থানীয়দের দাবি, মুক্ত দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে অন্তত জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বা সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে বিশেষ অনুষ্ঠান হওয়া উচিত।
জেলার বয়োজ্যেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, “আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় অধ্যায় হলো এই দিনটি। এখনকার তরুণরা জানুক—এটাই চাই। বড় অনুষ্ঠান না থাকলে তারা কিভাবে জানবে মুক্তির ইতিহাস?”
তরুণদের কৌতূহল—ইতিহাস জানতে চায় তারা
শহরের কলেজপড়ুয়া কয়েকজন তরুণ বলেন, প্রতি বছরই এ দিনে নানা আয়োজন হবে—এমন প্রত্যাশা থাকে। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প শোনার অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা—এগুলো না থাকলে দিনের আবেদন কমে যায় বলে তারা মনে করেন।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
১৯৭১ সালের উত্তাল ডিসেম্বর। টানা লড়াইয়ের পর ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাটকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অবিরাম সংগ্রাম ও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা সেই বিজয়কে সম্ভব করেছিল। স্বাধীনতার ইতিহাসে লালমনিরহাট তাই একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বহন করে।
দিনটি স্মরণ করার দাবি
স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, মুক্ত দিবসকে শুধু নিছক স্মৃতিচারণ নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করা দরকার—যাতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
তাদের কথা—“যত বছরই পেরিয়ে যাক, স্বাধীনতার দিনগুলো কখনো ছোট হয় না।





