ই-অরেঞ্জের টোপ ছিল ‘বিজ্ঞাপনে সেলিব্রেটি’

Shakil
বাংলাবাজার রিপোর্টার
প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ন, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | আপডেট: ৯:১৬ পূর্বাহ্ন, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
ফটো কোলাজ: বাংলাবাজার
ফটো কোলাজ: বাংলাবাজার

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ ‘সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন’ করিয়ে সেটা প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করতো। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ অন্য কর্মকর্তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এসব বিজ্ঞাপন তৈরি করতেন। বিশাল ডিসকাউন্টে পণ্য বিক্রি ও দ্বিগুণ লাভে ভাউচার বিক্রির অফার দিয়ে সেই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো। গ্রাহকরা বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করতেন। ই-অরেঞ্জের মালিকসহ অন্যরা পণ্য না দিয়ে এসব গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।

প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ একাধিক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে গুলশান থানায় করা আট মামলার চার্জশিট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আট মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে সোনিয়ার স্বামী মাসুকুর রহমান ও প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরীকে।

আরও পড়ুন: সাগর তীরে মিলল হাত-পায়ের রগ কাটা চবি শিক্ষার্থীর মরদেহ

এদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আরও ২৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়া পাঁচ মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক; বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে। সোহেল রানার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আরও ১৭টি মামলা রয়েছে। সোহেল রানা পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। মামলার চার্জশিটে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ই-অরেঞ্জ শপ নামক অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তারা অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিশাল ডিসকাউন্টে পণ্য বিক্রিয় ও দ্বিগুণ লাভে ভাউচার বিক্রির অফার দিতেন। এতে গ্রাহকরা বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করতেন। পণ্য না দিয়ে আসামিরা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেন। টাকা চাইতে গেলে আসামিরা গ্রাহকদের হুমকি দিতেন। আসামিরা পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬/৩৪ ধারায় অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন: ঢাকার আশুলিয়ায় দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

মুকুল সরকারের তিন লাখ ৩৫ হাজার ৬৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর বাদী হয়ে গুলশান থানায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরি, কাওছার আহম্মদ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আল রাসেলের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

দুই কোটি ৫৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাহফুজের মামলা: দুই কোটি ৫৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান থানায় সোনিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরী, জায়েদুল ফিরোজ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আল রাসেলের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

৪৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী আপেল। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান আসামি সোনিয়া, শেখ সোহেল রানা, মাসুকুর রহমান, আমান উল্লাহ চৌধুরি, জায়েদুল ফিরোজ, আব্দুল কাদের, রুবেল খান, কাওসার আহম্মদ, কামরুল হাসান আকাশ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আলম রাসেলকে অভিযুক্ত করে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।