গাজা ছেড়ে পালাচ্ছে হাজারো ফিলিস্তিনি, চলছে ভয়াবহ হামলা

ইসরায়েলি সেনাদের ভয়াবহ হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজারো ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘ তদন্ত কমিশন এ যুদ্ধকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা ও সমালোচনা আরও তীব্র হচ্ছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরের মধ্যে গাজা সিটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বোমা ও গুলিবর্ষণের মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেক মানুষ দক্ষিণ দিকে আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব এ হামলাকে “ভয়ঙ্কর” বলে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া স্বীকৃতি দিলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসবাবপত্র বোঝাই ভ্যান, গাধার গাড়ি আর হাতে সামান্য মালপত্র নিয়ে মানুষজন আল-রাশিদ সড়ক ধরে ধ্বংসস্তূপ আর ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে দক্ষিণের পথে ছুটছেন। তবে সেখানেও নিরাপদ আশ্রয়ের নিশ্চয়তা নেই।
শুধু মঙ্গলবার একদিনেই ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় অন্তত ৯১ জন নিহত হন। উপকূলীয় সড়ক ধরে পালানোর সময় বেসামরিকদের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়। ধ্বংস হয়েছে অন্তত ১৭টি আবাসিক ভবন। পূর্ব গাজার তুফফাহ এলাকায় একটি মসজিদও বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৯১ ফিলিস্তিনি
মানবাধিকার সংগঠন ইউরোমেড মনিটর জানিয়েছে, ইসরায়েল সেনারা বিস্ফোরক বোঝাই অন্তত ১৫টি রোবট ব্যবহার করছে, প্রতিটি রোবট দিয়ে প্রায় ২০টি বাড়ি ধ্বংস করা সম্ভব।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানায়, এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ গাজা সিটি ছেড়েছেন। তবে অনেকে পশ্চিম ও কেন্দ্র অংশে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ শহর ত্যাগ করেছেন।
দক্ষিণেও নিরাপদ নয় শরণার্থীরা। ইতোমধ্যেই রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে বিতাড়িত মানুষে ভরা আল-মাওয়াসি ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফলে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ আবার গাজা সিটির দিকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির ভেতরে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অগ্রসরমান অবস্থার ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেনাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে তাদের কয়েক মাস সময় লাগবে।
মেডিকেল সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর থেকে সারা গাজায় অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন।